শেরপুরে বাড়িঘর ভাংচুর-লুটপাটের অভিযোগ, নারীসহ  আহত ৩


বগুড়া প্রতিনিধি: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদি দল বিএনপি‘র প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ছিল গত ১ সেপ্টেম্বর। এ দলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী যথাযথভাবে পালনের সারাদেশের ন্যায় বগুড়ার শেরপুরেও আয়োজন করে স্থানীয় বিএনপি। প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীকে কেন্দ্র করে শেরপুরের দ্বিধাবিভক্ত বিএনপি পৃথক পৃথক আয়োজন করে।

নিজের সাংগঠনিক ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য উভয় গ্রুপ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন-গ্রাম থেকে কর্মী সমর্থক সংগ্রহ করার প্রতিযোগীতায় মেতে উঠে। এর ধারাবাহিকতায় বিএনপি’র প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর বিভিন্ন কর্মসুচীতে অংশগ্রহন না করায় বাড়িঘর ভাংচুর, লুটপাট ও মারপিটের ঘটনা ঘটেছে বিএনপি’র সাবেক এমপি জিএম সিরাজ গ্রুপের বিরুদ্ধে।

ঘটনাটি শনিবার(০২ সেপ্টেম্বর) রাত অনুমান সোয়া ৯টার দিকে উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের খন্দকারটোলা এলাকায় ঘটে। এঘটনার প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী আব্দুল লতিফ বাদী হয়ে শেরপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট ওসি বাবু কুমার সাহা নিশ্চিত করেছেন।

অভিযোগে জানা যায়, স্থানীয় বিএনপি’র প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর বিভিন্ন কর্মসূচীতে অংশ গ্রহন করায় উপজেলার শাহ-বন্দেগী ইউনিয়নের খন্দকারটোলা এলাকার আব্দুল লতিফের ছেলে সামিউল ইসলাম ২ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে শহর থেকে নিজ বাড়ীর দিকে যাচ্ছিল।

এসময় শেরপুর-ধুনট আসনের সাবেক সাংসদ জিএম সিরাজের গ্রুপের সমর্থিত স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির যুব বিষয়ক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সামিউল ইসলামের পথরোধ করে এবং অতর্কিতভাবে মারপিট শুরু করে।

এ সময় সামিউল দৌড়ে তার বাড়ীর দিকে ছুটে গেলে ওইসব নেতাকর্মী ও সমর্থকরা ধাওয়া করে এবং একপর্যায়ে বাড়িঘর, আসবাবপত্র, অটোরিক্সা ভাংচুর সহ ও স্বর্ণের গহনা, নগদঅর্থ লুটপাট করে। বিএনপি নেতাদের মারপিটে সামিউল ইসলাম ও তার স্ত্রী আখি খাতুন ও ভায়রা চাঁনমিয়া আহত হন। এতে প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে বলে ভুক্তভোগীর পরিবার জানায়।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আব্দুল লতিফ বাদী হয়ে ২ সেপ্টেম্বর রাতে স্থানীয় বিএনপি নেতা আরিফুল ইসলাম, শামীম হোসেন, জাকারিয়া, জাহিদ হোসেনসহ অজ্ঞাতনামা ২০/২৫জনের বিরুদ্ধে শেরপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।

এ বিষয়ে ভূক্তভোগী আব্দুল লতিফ বলেন, আমি ও আমার পারিবারের লোকজন মনেপ্রাণে প্রকাশ্যে কোন দলের সমর্থন করিনা। কিন্তু আমাদেরকে বিএনপি’র প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে অংশগ্রহনের চাপ দেয় স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা। কিন্তু আমরা রাজী না থাকায় তারা আমার ছেলেকে মেরে ফেলা চেষ্টা সহ আমার বাড়ীঘর ভাংচুর ও অর্থলুটপাট করে। তাদের মারপিটে ৩জন আহত হয়ে শেরপুর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়।

উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মিন্টু বলেন, বিএনপি একটি বৃহত্তম দল। এ দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দু‘একজন না আসলে কিছু যায় আসবে না। তবে সামনে জাতীয় নির্বাচন তাই গায়েবী মামলা দিয়ে বিএনপি’র বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।

উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি মো. শহীদুল ইসলাম বাবলু বলেন, এ ঘটনাটি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমাদের দলের বিরুদ্ধে এটা ষড়যন্ত্রমুলক ঘটনা সাজিয়ে ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা করছে একটি মহল।

শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) বাবু কুমার সাহা অভিযোগ প্রাপ্তি স্বীকার করে বলেন, এ ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।