লাইফস্টাইল ডেস্ক: গত চার মাস ধরে লকডাউনে অধিকাংশ মানুষ সারাদিন বাড়িতে বসে বিরক্ত। অফুরন্ত এ অবসর কাটাতে বিপুল সংখ্যক মানুষ সময় কাটাচ্ছেন টেলিভিশনে বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান ও চলচ্চিত্র দেখে। কিন্তু, এ প্রবণতা দেহের জন্য বাড়তি ঝুঁকি তৈরি করছে। এমনকি খুব বেশি সময় টেলিভিশন সেটের সঙ্গে কাটালে তা আপনার বেঁচে থাকার সম্ভাবনাকেই কমায়। এমনটাই জানা গেছে গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক এক গবেষণা সূত্রে।
গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই গবেষণায় বলা হয়, দিনে মাত্র দুইঘণ্টা বা তার কম সময় টেলিভিশন, মোবাইল বা অন্য ডিভাইসের পর্দায় চোখ রাখলে তাতে ক্যান্সার ও হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই হ্রাস পায়। পর্দার চোখ রাখার এ সময়কে বলা হয় ‘স্ক্রিন টাইম’।
সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা জানান, গবেষণার ফলাফল প্রাপ্তবয়স্কদের ‘স্ক্রিন টাইম’ কমানোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরছে। ৩৭ থেকে ৭২ বছর বয়সী মত পাঁচ লাখ স্বেচ্ছাসেবী গবেষণায় অংশ নেন। যা ২০০৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ এক যুগ ধরে পরিচালনা করা হয়।
গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানান, ‘স্বেচ্ছাসেবীরা যদি দিনে মাত্র দুই ঘণ্টা বিনোদন যন্ত্রের পর্দায় চোখ রাখতেন, তাহলে তাদের ৫ দশমিক ৬২ শতাংশ মৃত্যুঝুঁকি এড়াতে পারতেন। আর হৃদরোগ সংক্রান্ত মৃত্যু এড়ানো বা তার প্রবণতা হ্রাস করতে পারতেন এদের ৭ দশমিক ৯৭ শতাংশ।’
এ গবেষণায় নেতৃত্ব দেন গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউড অব হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিয়িং সেন্টারের বিজ্ঞানী ড. হেমিশ ফস্টার।
ড. ফস্টার জানান, ‘আমাদের সাম্প্রতিক অনুসন্ধান ইতোমধ্যেই বিদ্যমান অন্যান্য গবেষণার তথ্য-উপাত্তকে সমর্থন করে। এসব গবেষণা বলছে, শারীরিক পরিশ্রম ছাড়া খুব বেশি সময় বসে বসে টেলিভিশন দেখলে তা স্বাস্থ্যকে রুগ্ন করে।’
“আমাদের গবেষণা আরও বলছে, টেলিভিশনের পর্দায় চোখ রাখার সময় কমিয়ে আনলে; স্বাস্থ্যঝুঁকি সংক্রান্ত সমস্যাগুলো অনেকটাই এড়িয়ে চলা সম্ভব। তবে এটি নিয়ে আরও বিস্তারিত পর্যালোচনার অবকাশ আছে। তারপরই টেলিভিশন দেখার নিরাপদ সময় সংক্রান্ত বিধি বাৎলে দেওয়া সম্ভব” যোগ করেন ফস্টার।
তিনি আরও জানান, স্বাস্থ্য সম্মত নয় এমন খাদ্যাভাস এবং সামাজিক সংস্পর্শ এড়িয়ে অধিক সময় ঘরে বসে পার করার সঙ্গে, বিনোদন মাধ্যমের পর্দায় চোখ রাখা এবং দুর্বল স্বাস্থ্যের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে।
এক্ষেত্রে, ‘স্ক্রিন টাইম’ কমিয়ে ওই সময়টা হেঁটে বেড়ানো বা শারীরিক কসরতে ব্যয় করার পরামর্শ দিয়েছেন গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।