নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের আরও ৬৫ জন কয়েদিকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে সরকার। রোববার (০২ মে) রাজশাহী কারা কর্তৃপক্ষ এ নির্দেশনা পেয়েছে। এর আগে শনিবার কারাগারের ৩৩ বন্দীকে ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
নির্দেশনা পেয়ে সেদিনই সন্ধ্যায় ১৭ কয়েদিকে মুক্তি দেয় কারা কর্তৃপক্ষ। রোববার সন্ধ্যায় আরও ২১ জনকে মুক্তি দেয়া হয়। দুই দিনে এই কারাগার থেকে মোট ৩৮ জনকে মুক্তি দেয়া হলো। এর মধ্যে একজন নারী। বাকিরা পুরুষ। রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার গিয়াস উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমিত কোভিড-১৯ রোগের বিস্তার রোধে কারাগারগুলোতে ভিড় কমাতে সরকার লঘু অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের সাজা মওকুফ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ রকম বন্দিদের তালিকা কিছু দিন আগে কারা অধিদপ্তর সারাদেশের কারাগুলো থেকে নিয়েছিল। তালিকা পাওয়ার পর সারাদেশের ২ হাজার ৮৮৪ জনকে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি জানান, তিন ধাপে কয়েদিদের মুক্তি দেয়া হবে। এর মধ্যে শনিবার প্রথম ধাপে রাজশাহীর ৩৩ জন কয়েদিকে ছেড়ে দেয়ার জন্য তিনি চিঠি পান। রোববার দ্বিতীয় দফায় আরও ৬৫ জনকে ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ এসেছে। এ দিন মোট ২১ জনকে মুক্তি দেয়া হয়েছে।
কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাদের কারাদণ্ডের মেয়াদ এক বছর, কিন্তু ছয়মাস বা তারও বেশি সাজা খেটেছেন এ রকম কয়েদিদেরই সাধারণ ক্ষমায় সাজা মওকুফ করা হয়েছে। দুই দিনে রাজশাহীর ৯৮ কয়েদিকে মুক্তির নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩৮ জন বাড়ি চলে গেলেও মুক্তির অপেক্ষায় আছেন ৬০ জন। যারা মুক্তি পাচ্ছেন তাদের এ মামলায় আর কারাগারে যাওয়া লাগবে না। সাজা একেবারেই মওকুফ করে দেয়া হয়েছে।
কারা কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন জানান, সরকার শুধুমাত্র কারাদণ্ড মওকুফ করেছে। তবে জরিমানা মওকুফ নয়। অনেকেরই মামলার রায় ঘোষণার সময় কারাদণ্ডের পাশাপাশি অর্থদণ্ড দিয়ে থাকেন আদালত। যাদের অর্থদণ্ড ছিলো না তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। যাদের অর্থদণ্ড পরিশোধ করা নেই তারা যেতে পারছেন না। এখন ব্যাংক খোলা আছে, বন্দিদের স্বজনরা জরিমানার টাকা জমা দিলেই তাদের ছেড়ে দেয়া হবে।
গিয়াস উদ্দিন আরও জানান, পরিবারের সদস্যদের ফোন করে জরিমানার অর্থ পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। এই ধরনের মুহূর্তে প্রতারকদের অন্য বন্দিদের স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকা চাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই বন্দীর স্বজনদের সতর্ক থাকতে হবে। কেউ টাকা চাইলেই তারা যেন না দিয়ে দেন। কারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েই যেন তারা ব্যাংকে টাকা দেন।
প্রসঙ্গত, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের ধারণক্ষমতা ১ হাজার ৪৫০ জন। কিন্তু রোববার উত্তরাঞ্চলের বৃহৎ এই কারাগারে হাজতি এবং কয়েদি মিলিয়ে বন্দীর সংখ্যা ৩ হাজার ৬১০ জন। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে ঝুঁকি কমাতে আরও দ্ইু দফায় এখান থেকে বন্দিদের মুক্তি দেয়া হবে বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।