৮দিনের ব্যবধানে কেজি প্রতি ৪টাকা বেশিবেড়েই চলেছে আলু’র দাম


সাইদ সাজু, তানোর থেকে : রাজশাহীর তানোরে বেড়েই চলেছে আলু’র দাম, গত ৮দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ৩টাকা থেকে ৪টাকা পর্যন্ত। গত সপ্তাহে ষ্টোরে পাইকারী যে আলু বিক্রি হয়েছে ৩১টাকা থেকে ৩২টাকা কেজি সেই আলু এখন বিক্রি হচ্ছে ৩৫টাকা থেকে ৩৬ টাকা কেজি। যা সর্বকালের সর্বোচ্চ বেশি দাম উঠেছে এবছরই।

দাম বেশি হওয়ায় আলু চাষীদের চোখে মুখে ফুটে উঠেছে খুশির ঝিলিক। সেই সাথে এবছর আলু চাষ করে এনেকেই এখন কোটি টাকার মুখ দেখছেন। আলু চাষে ভাগ্য ফিরেছে চাষীদের। আলু চাষ করে যেসব চাষী নিঃস্ব হয়ে পথে বসেছিলেন তারা এবছর তা পুষিয়ে নিয়ে নতুন ভাবে স্বপ্ন দেখছেন।

আলু চাষীসহ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার মহামারীসহ দফায় দফায় বন্যার কারনে এবছর সবজিল আদান কম হওয়ায় এবছর আলু’র দামের দিক থেকে সর্বকালের সব রেকর্ড ভেঙ্গে চাষীরা ষ্টোরে পাইকারী আলু বিক্রি করছেন প্রতি কেজি ৩৫ টাকা থেকে ৩৬ টাকা। চাষীরা বলছেন গত ১ মাসের ব্যবধানে কেজি প্রতি পাইকারী আলু’র দাম বেড়েছে ১০টাকা থেকে ১২টাকা পর্যন্ত।

এর মধ্যে গত ১ সপ্তাহের ব্যবধানেই আলু’র দাম কেজি প্রতি ৩টাকা থেকে ৪টাকা বেড়ে কেজি আলু বর্তমানে পাইকারী বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা থেকে ৩৬ টাকা। এবছর কৃষকরা কাংখিত দামের চেয়েও অনেক বেশী দাম পাওয়ায় কৃষকরা নতুন স্বপ্নে আলু চাষের মাত্রা বাড়ানোর চেষ্টা করছেন।

এবিষয়ে গুবির পাড়া গ্রামের আদর্শ আলু চাষী আব্দুল হালিম বলেন, গত কয়েক বছর ধরে আলু’র দাম উঠা-নামা করায় চাষীরা কোন বছর লোকসানে মুখে পড়ে নিঃস্ব হয়েছেন, কোন বছর সামান্য লাভ করেছেন, আবার কোন কোন বছর লাভের মুখ দেখতে পাননি কৃষকরা। তিনি বলেন, এবছর দাম আকাশ চুম্বি হওয়ায় আলু চাষে কৃষকদের ভাগ্যে’র পরিবর্তন ঘটিয়েছে, এবছর আলু চাষ করে অনেক চাষী কোটি টাকার মুখ দেখছেন।

অন্যবছর গুলোতে আলু’র সর্বোচ্চ দাম ছিলো ২১টাকা থেকে ২২টাকা কেজি, এবছর গত সপ্তাহে প্রতি কেজি আলু পাইকারী বিক্রি হয়েছে ৩২ টাকা থেকে ৩৩ টাকা, সেই ৮দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ৩টাকা থেকে ৪টাকা, বর্তমানে আলু’র প্রতি কেজি পাইকারী বিক্রি হচ্ছে ৩৫টাকা থেকে ৩৬টাকা।

তিনি আরো বলেন, এবছর আলু’র দাম বেশী হওয়ায় অতীতের সকল লুকসান কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছেন চাষীরা, যেসব চাষীরা ষ্টোরে লোন নিয়ে পরিশোধ করতে পারেননি তারা এবছর পরিশোধ করতে পারায় চাষীদের চোখে মুখে ফুটে উঠেছে খুশির ঝিলিক।

গত কয়েক সপ্তাহ থেকে কোল্ড ষ্টোরগুলোতে পুরো দমে শুরু হয়েছে আলু কেনা-বেচা। রাজধানী ঢাকা, চট্রগ্রাম, খুলনা, যশোরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকাররা এসে আলু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও আলু চাষীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে তানোর উপজেলায় প্রায় সাড়ে ১২ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। এবছর জমি থেকে শুরু করে হিমাগার ভাড়াসহ ১কেজি আলু উৎপাদনে কৃষকের সর্বচ্চ খরচ হয়েছে ১২টাকা থেকে ১৩টাকা।

এক বিঘা জমিতে আলু’র ফলন হয়েছে সাড়ে ৪হাজার কেজি থেকে ৫হাজার কেজি। তানোর উপজেলায় যেসব চাষী ৫০ বিঘা থেকে ১শ’ বিঘা এবং তারও বেশী জমিতে আলু চাষ করেছেন এবছর তারা কোটি টাকার মুখ দেখছেন। এবছর আলু’র দাম বেশী হওয়ায় আগামী বছরে আলুর চাষ বাড়বে বলেও জানান চাষীরা।