একজন শিক্ষক একশো জনের জীবন বদলে দিতে পারেন – পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী


একজন শিক্ষক একশো জন ছাত্রের জীবন বদলে দিতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোঃ শাহ্রিয়ার আলম, এমপি।  রবিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজশাহীর বাঘা উপজেলা পরিষদ চত্বরে উপজেলা পরিচালন ও উন্নয়ন প্রকল্পের সহায়তায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ও কম্পিউটার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

শাহ্রিয়ার আলম বলেন, যিনি পড়াশুনা শিখে জীবনে শিক্ষিত ও প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন তাঁর জীবনে অবশ্যই একজন শিক্ষকের এমন ভূমিকা থাকে যে, তা বাবা-মা, প্রতিবেশী বা স্থানীয় কোনো জনপ্রতিনিধি যে ভূমিকা থাকে তার চেয়েও বেশি।এমন কোনো ব্যক্তি পাওয়া যাবে না যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, আর তার জীবনে কোনো একজন শিক্ষকের বড় কোনো অবদান নেই। একজন শিক্ষক এক জন-দশ জন বা একশো জন ছাত্রের জীবন পাল্টে দিতে পারেন।

স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে স্মার্ট করে গড়ে তুলতে শিক্ষকদের পরামর্শ দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আজ থেকে ১৫ বছর পর বাংলাদেশ যে জায়গায় গিয়ে দাঁড়াবে সেই সময় দেশকে এগিয়ে নেবে আজকের শিক্ষার্থীরা। সেই জন্য আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে উচ্চমানের ও স্মার্ট করতে চাই। তাই শিক্ষকদের গুরু দায়িত্ব নিতে হবে, ফাঁকি দেয়া যাবে না। কারণ তারাই শিক্ষার্থীদের স্মার্ট করে গড়ে তুলতে পারেন। শিক্ষার্থীদের শুধু পোশাক-আশাক, টাচ ফোন আর চুলের স্টাইলে স্মার্ট হলে হবে না। তাদেরকে লেখাপড়ায় স্মার্ট হতে হবে, মানসিকতায় স্মার্ট হতে হবে।

তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে আজকের শিক্ষার্থীদের গড়ে তোলার জন্য কাজ করা হচ্ছে। আগে দেশের অল্প কিছু উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ছিল আর এখন প্রাইমারি স্কুল, হাইস্কুল, কলেজ প্রায় সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম্পিউটারের ব্যবস্থা রয়েছে। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বাঘার প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম্পিউটারের ব্যবস্থা করার কথা জানান তিনি।একইসঙ্গে যে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার রয়েছে সেগুলো যেন যথাযথ ব্যবহার করা হয় সে বিষয়ে তদারকি করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশ দেনতিনি।

এসময় সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন তুলে ধরে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, আজকে বাংলাদেশ যে জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে তা বিশে^র অনেক দেশকে ঈর্ষান্বিত করে। ১৯৭১ সালে আমরা যে দেশের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম, আজকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সেই দেশকে পেছনে ফেলেছিÑ এটা সহজ ছিল না।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এটা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, আজকে আমাদের অর্থনীতির আকার পৃথিবীতে ৩৫তম।

মজার ব্যাপার হলোÑ মালয়েশিয়া ৩৬তম, সিঙ্গাপুর ৩৭তম, ভিয়েতনাম ৩৮তম। এইসব দেশগুলো আমাদের পেছনে। কিন্তু যেদিন আমরা এই অবস্থানে এসেছি, সেদিন মেগাপ্রকল্পগুলো ছাড়াই এই অবস্থানে পৌঁছেছি। মেগাপ্রকল্পগুলো যখন আমাদের অর্থনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হবে, তখন দেশ কোথায় যাবে?Ñ তা সরল করে বের করতে হবে। বাংলাদেশ আরও উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হবে।

অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তারের সভাপতিত্বে আড়ানী পৌর মেয়র মোঃ মোক্তার আলী বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার বিভাগ ও জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)-র সহায়তায় ২৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ও কম্পিউটার বিতরণ করা হয়। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেমাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরসহ কম্পিউটার সরবরাহ করা হবে বলে জানা যায়।