চিরনিদ্রায় শায়িত অধ্যাপক আনিসুজ্জামান


রাপ্র ডেস্ক: চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া বরেণ্য শিক্ষাবিদ ও জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

শুক্রবার (১৫ মে) বেলা পৌনে ১১টায় রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তার দাফন করা হয়েছে।।

বিষয়টি নিশ্চিত করে তার ছেলে আনন্দ জামান জানান, ‘আজ বেলা পৌনে ১১টায় দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এসময় সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের লিটু, আমার দুলাভাই (ড. আনিসুজ্জামানের জামাতা) আজিমুল হক, চাচা আখতারুজ্জামানসহ কয়েকজন আত্মীয় উপস্থিত ছিলেন।’।

এর আগে সকাল ১০টার দিকে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) থেকে ড. আনিসুজ্জামানের মরদেহ আজিমপুর কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তার দাফনের সব আনুষ্ঠানিকতা হয়। ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। দাফন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আল মারকাজুল ইসলাম।।

অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষে গার্ড অব অনার দেন ধানমন্ডি রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রবিউল আলম। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা বাবর আলী মীর, সমাজকল্যাণ কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন, রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের উপপরিদর্শক আব্দুর রহমানসহ অন্য কয়েকজন পুলিশ সদস্য।।

বিশিষ্ট এই মুক্তিযোদ্ধা বৃহস্পতিবার (১৪ মে) রাজধানী ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ড. আনিসুজ্জামান।।

মৃত্যুর আগে ও পরে তার শরীর থেকে সংগৃহীত নমুনায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া যায়। সে কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তার জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয় এবং এই শিক্ষাবিদকে শ্রদ্ধা জানানোর অন্য সব কর্মসূচি বাতিল করা হয়। অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।।

ড. আনিসুজ্জামানের জন্ম ১৯৩৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি। তিনি ভাষা আন্দোলন (১৯৫২), ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান (১৯৬৯) ও ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে ড. কুদরাত-এ-খুদাকে প্রধান করে গঠিত জাতীয় শিক্ষা কমিশনের সদস্য ছিলেন।।

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইমেরিটাস অধ্যাপক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন আনিসুজ্জামান। ১৯৮৫ সালে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস নিয়ে তার গবেষণা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি ২০১২ সাল থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বাংলা একাডেমির সভাপতি ছিলেন।।