দোকানিদের ইচ্ছেমতো লাগামহীন খাবারের মূল্য বৃদ্ধি ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা


রাবি প্রতিনিধি : প্রতিনিয়ত দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ার অজুহাতে  ইচ্ছে মতো লাগামহীন খাবারের দাম বাড়িয়েছে  রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হোটেল মালিকরা। তবে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার দেখা মেলেনি।ফলে দোকান গুলোর খাবারের দাম দিনদিন অনিয়ন্ত্রিত ভাবে বেড়ে যাওয়াই ভোগান্তিতে পড়ছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের টুকিটাকির বিভিন্ন দোকানে ,সিলসিলা এক প্লেট ভাতের দাম রাখা হচ্ছে ১৫ টাকা, অন্য দোকানে ১০ টাকা। স্টেশন বাজারে, জিয়া হলের সামনে  দোকানে একটা সিঙ্গারা, চপ ও পুরির দাম ৫টাকা আবার সিলসিলা,  টুকিটাকিতে ৮ টাকা। তাছাড়া, কিছু দোকানে খিচুড়ি ২০টাকা প্লেট হলেও পরিমাণে অনেক কম।
এসব দোকানে খাবারে দাম বাড়লেও কোন খাবারে মান বাড়েনি। এতে করে বিভিন্ন সময়ে দাম ও মান নিয়ে দোকানীদের মধ্য বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়াচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী তৌফিক বলেন, টুকিটাকির খাবারের দাম তুলনামূলক অনেক বেশি। দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধির ফায়দা লুটে দাম বাড়িয়েছে টুকিটাকি চত্বর ও সিরাজী ভবনের সামনের দোকানিরা। খাবারের মূল্য নির্ধারিত না থাকায় নিজেদের ইচ্ছামতো দাম নিচ্ছে তারা। ক্যাম্পাসের বটতলায় মিজানের দোকানে যে ভাত ১০ টাকা প্লেট, টুকিটাকিতে সে ভাত ১৫ টাকা। দুইটা পরটা আর ভাজি ২৪ টাকা। অথচ জিয়া হলের বাবু ভাইয়ের দোকানে একই পুরি ভাজি ১৫ টাকা।  বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে স্টেশন বাজারের সিস্টেম মিল ২৫টাকায় পাঁচ প্রকার সবজি হলেও টুকিটাকিতে একই সিস্টেমে পাতলা ডাল, একপিচ বেগুন আলু ভাজি ৩৫ টাকা।
নিয়মিত দোকানগুলোতে প্রশাসনের মনিটরিং করা হয় না। এ জন্য দোকানীরা ইচ্ছে মতো দাম নিচ্ছে অভিযোগ করে গণযোগাযোগ সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুল ইসলাম ধ্রুব বলেন, প্রশাসন যদি নিয়মিত দোকানগুলো মনিটরিং করত তাহলে শিক্ষার্থীরা অনেকটাই রেহাই পেত।’
একজন সাধারণ শিক্ষার্থীর জন্য একবেলায় খাবারে ৫০-৬০ টাকা খরচ পড়ে যায় খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। দোকানগুলোর খাবারের দাম বাড়লেও আমাদের পরিবারের থেকে মাসিক  টাকার পরিমাণ বাড়েনি যা আগের মতোই  হয়েছে। রাজশাহীতে আয় করারও কোনো উৎস নেই যে আমরা আয় করবো।
দাম বাড়ানোর বিষয়ে দোকানীরা বলেন, ভর্তি পরীক্ষার সময়ে প্রসাশনের নির্ধারিত দামে আমরা খাবারের তালিকা তৈরী করেছি । সেই নির্ধারিত তালিকার থেকেও কম দাম নিচ্ছি। শুধু পুরি ও রুটির দাম বাড়িয়েছি। বাজারে গ্যাস তেলসহ প্রয়োজনীয় দ্রব্য দাম তুলনামূলক বেশি হওয়ায় আমরা খাবারে দু’এক টাকা বৃদ্ধি করেছি । বাজারের সাথে আমাদের ব্যবসা জিনিসপত্রের দাম কম হলে আমরা কম নিব বেশি হলে বেশি।
এ বিষয়ে রাবি শাখা কনজ্যুমার ইয়ুথ সভাপতি জেড এম তৌহিদুর নুর প্রিতম বলেন, আমরা উপ উপাচার্য স্যারের সঙ্গে দেখা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুক্ত দোকানগুলোর খাবারের মূল্য তালিকা সমন্বয় করার জন্য প্রস্তাব হাতে নিয়েছি। ইতিমধ্যে প্রক্টর মহোদয়ের সঙ্গে দেখা করে পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছি। আশাকরি খাবারের মান বৃদ্ধিসহ অনিয়ন্ত্রিত দাম কমানোর বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অতি দ্রুতই পদক্ষেপ নেবে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. আসাবুল হক  বলেন, খাবারের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়ালবডি ইতোমধ্যে স্টেট দপ্তরকে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য জানিয়েছে। অতি দ্রুতই সকল দোকানে একই ধরনের খাদ্য তালিকা রাখার নির্দেশনা দেয়া হবে। এরপরও যদি কেউ খাবারের দাম অতিরিক্ত আদায় করে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।