নওগাঁয় চেয়ারম্যানসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনীদেরকে দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবীতে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত


রায়হান আলম, নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁ সদর উপজেলার শৈলগাছী ইউনিয়নের রামরায়পুর দিঘীরপাড় এলাকায় ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ালীগের সভাপতি আব্দুল গফুর সরদারসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনীকে দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তির দাবীতে প্রতিবাদ সভা করেছে এলাকাবাসীরা। 

বুধবার বিকালে দিঘীরপাড় চত্বরে মাষ্টার সাহাবুদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় অন্যান্যের মধ্যে ইউনিয়ন কৃষকলীগের সভাপতি, অব: শিক্ষক ও বীরমুক্তিযোদ্ধা সেকেন্দার আলী, আওয়ামীলীগ নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন, ইউনিয়ন আলীগের সাবেক সাংঘঠনিক সম্পাদক ইয়াছিন আলী, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শাহাদত হোসেন, ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, সজিব হোসেন, আব্দুল মান্নান, টপি খাতুনসহ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

বক্তারা বলেন, রামরায়পুর দিঘী সরকারের নিকট থেকে ৩ বছর ধরে লীজ নিয়ে মাছ চাষ করে আসছিল পাশবর্তী পাঠাকাটা গ্রামের মৎসজীবি সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন গং। দিঘীর দক্ষিনপাড়ে মাছের খাদ্যের জন্য টিনের বেড়ার ঘর করে মাছের খাদ্যদ্রব্য রাখে। দিঘী ও তার চারিদিকের পাড় সরকারী সম্পত্তি। ওই সম্পত্তির উপর চেয়ারম্যানের কুনজর পড়ে। চেয়ারম্যান সরকারী সম্পত্তি গোপনে ৪ লাখ টাকায় বিক্রি করে রামরায়পুর গ্রামের মজিবরের পুত্র জুয়েল, মৃত শমসেরের পুত্র মোজাহার ও দরিয়াপুর গ্রামের মৃত জগির পুত্র সামাদের নিকট। এনিয়ে বিরোধ বাধে সমিতির সভাপতি ও চেয়ারম্যানের মধ্যে। আবুল হোসেন ঘরটি মেরামত করতে লাগলে চেয়ারম্যান গ্রাম পুলিশ দিয়ে বাধা দিলে কাজ বন্ধ রাখে।

২১ জুন পুনরায় মেরামত করতে লাগলে চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতেই তার নির্দেশে তার সন্ত্রাসী বাহিনী রামরায়পুর গ্রামের চিহ্নিত ভূমি দশ্যু আব্বাছ আলী ও তার পুত্র আনোয়ারসহ ১৫/২০ জন, গুমারদহ সাহানাপাড়া গ্রামের চিহ্নিত সন্ত্রাসী হাজেরসহ তার বাহিনী ৫০/৬০ জন এবং পাশবর্তী শিকারপুর ইউনিয়নের বিলভবানীপুর গ্রামের প্রায় ৫০/৬০ লোক রামদা, হাসুয়া, লাঠি ফালা দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র সজ্জিত হয়ে আবুলের উপর হামলা চালিযে মারপিট ভাংচুর লুটপাট করে। এসময় আবুলের লোকজন বাধা দিলে তার লোকজনের উপর হামলা চালিয়ে পাটাকাঠা গ্রামের মৃত ইয়াছিন আলী পুত্র দেলোয়ার হোসেন (৩২),লালচাদের পুত্র শাহাদত হোনে (৪০),আমজাদের পুত্র আ: রাজ্জাক (৩৫), রামরায়পুর গ্রামের আবদুলের পুত্র ফেরদৌস (৫৫), ফেরদৌসের পুত্র সোহেল, কছিমুদ্দীনের পুত্র এজদুল (৩২) ও মাজেদুলসহ আর ১০/১২ জন গুরুতর জখম করে। ঘরগুলো তছনছ করে দেয়।

আহতদের এলাকাবাসীরা উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পথে ২য় দফায় মারধর করে নারী পুরুষকে বিবস্ত্র করে সন্ত্রাসীরা। তাদেরকে নওগাঁ হাসপাতালে ভর্তি করে দিলে তাদের মধ্যে অবস্থার অবনতি হলে রাজশাহী ও বগুড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালো ভর্তি করে। তারা হাত পায়ে মাথায় ও ঘাড়ে মুখে গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। থানায় মামলা করতে গেলে থানায় মামলা নেয় না। বরং উল্টো চেয়ারম্যান বাদী হয়ে ১৮ জনকে আসামী করে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। পরে বেলাল হোসেন বাদী হয়ে ৮ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করে। কিন্তু পুলিশ আসামীকে না ধরে উল্টো আমাদেরকে হয়রানী করছে বলে জানান তারা। অবিলম্বে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা আ: গফুর ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীকে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী জানান। সভায় দুই সহ¯্রাধিক নারী পুরুষ অংশ গ্রহন করেন।

এ ব্যাপারে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল গফুর সরদারের জানতে চাইলে তিনি জানান আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পূর্ন মিথ্যা ভিত্তিহীন উদ্দেশ্য প্রনোদিত। আমি দীর্ঘদিন থেকে ওই ইউনিয়নে সুনামের সাথে চেয়ারম্যান হয়ে এবং আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও সভাপতি হয়ে সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে আসছি। আমার কাজ দেখে ঈশ্বান্নিত হয়ে একটি মহল অপপ্রচার করে আসছে। আমাকে আমার ইউনিয়নবাসীর কাছে মিথ্যাভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য প্রতিপক্ষরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। আমি কোন সরকারী জায়গা বিক্রি করি নাই। পাশে দিঘিরপার উচ্চ বিদ্যালয়ের স্বার্থে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের অনুরোধে ওই স্থানে ঘর করলে বিদ্যালয়ের ক্ষতি হবে বলেই আমি ঘর করতে নিষেধ করি।

এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সোরওয়ার্দি হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, দিঘীরপাড়ের সরকারী সম্পত্তি নিয়ে ঘর নিয়ে বিরোধে উভয় পক্ষই মারপিটে আহত হয়। উভয় পক্ষই মামলা দিলে মামলা রেকর্ড করি। আসামী ধরার জোর চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।