পুঠিয়ায় ফসলী জমিতে পুকুর খননের হিরিক


পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধিঃ  জেলা প্রশাসকের আদেশ অমান্য করে ফসলী জমিতে ভেকু মেশিন দিয়ে দিন-রাত পুকুর খনন করছে দালালরা। এলাকাবাসী জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দেন। তারপরও পুকুর খনন করায় এলাবাসী মানবন্ধন করেন। পুকুর খননকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় সেখানে যে কোন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, রাজশাহীর জেলা প্রশাসক সাহেবের পক্ষ থেকে জেলায় পুকুর করা যাবেনা মর্মে নির্দেশ দেন। অথচ পুঠিয়ার কয়েকটি স্থানে দিন রাত পুকুর খনন চলছে।
এলাকাবাসী জানায়, রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার ভালুকগাছী ইউনিয়নের গোটিয়া বিলে রবিবার সকাল থেকে দুটি স্থানে পুকুর খনন করছে দাললরা। এলাকাবাসী প্রতিবাদ করেও কোন সুফল পাইনি। প্রশাসন আসার আগেই খননকারীরা ভেকু মেশিন নিরাপদ রেখে পালিয়ে যায়। এই নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া রয়েছে বলে জানায়।
ইতিমধ্যে ফসলী জমিতে পুকুর খননের প্রতিবাদে এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছে। এছাড়া এলাকাবাসী জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর গণস্বাক্ষর দিয়ে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
গত ৪ মে ভালুকগাছীর গোটিয়া বিলের জমির মালিক ও এলকাবাসী ৩ ঘন্টা মানববন্ধন করেন। খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি রুমানা আফরোজ ঘটনাস্থলে গিয়ে পুকুর খনন বন্ধে ববস্থা নেওয়ার বিষয়ে আসস্ত করেন।
গত এপ্রিল মাসে ১১ তারিখে রাজশাহীর রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর মোছাঃ নাজমুল নাহার স্বাক্ষতির বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশক্রমে অনুরোধ করে পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট একটি পত্র প্রেরণ করেন।
ফসলী জমিতে পুকুর খনন এর প্রতিবাদে গত ২৩ এপ্রিল গোটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে মাঠে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভার লিখিত রেজুলেশন সূত্রে জানা গেছে, উক্ত বিলে ৫ টি নলকুপের ফসলী জমিতে ৩ টি ফসল হয়। সেই জমিতে ভালুকগাছী ইউনিয়ন পরিষদের পূর্ব পার্শ্বে দুর্গাপুর থানার হোজা গ্রামের মোঃ আঃ লতিফ এবং মোঃ আব্দুল কাদের সহ কয়েকজন অন্যায় ভাবে পুকুর খনন করছে। সেই সভার রেজুলেশনে প্রায় ৩৬৩ জন এলাকার মানুষ স্বাক্ষর করেন। সেই রেজুলেশনের ফটোকপি সহ জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর জমা দেন।
এলাকাবাসী আরো জানায়, পুকুর খননের শুরুতেই এলাকার লোকজন একসাথে সাবই প্রতিবাদ করেছিলো। পরবর্তী সময়ে নেতৃত্ব দেওয়া কয়েক জন গোপন চুক্তির মাধ্যমে তাদের দলে চলে যায়। এরপর থেকে যারা প্রতিবাদ করছে তাদেরকেই বিভিন্ন রকম হুমকি প্রদান করছে বলে জানায়।
অফিসার ইনচার্জ রেজাউল ইসলাম জানান, আমাদেরকে কেউ জানাই নাই। তবে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি রুমানা আফরোজ জানান, আমি ইতি পূর্বে ৪ বার ভ্রম্যমান আদালত পরিচালনা করেছি। আর একবার মানববন্ধনের দিনে গিয়ে এলাকাবাসীকে আসস্ব করেছি। বিষয়টি শুনার পর নায়েব সাহেবকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ওলিউজ্জামান জানান, বিষয়টা শুনেছি। গোটিয়ার বিলে যারা পুকুর খনন করছে তাদের কোন বৈধ্যতা নেই। আমাদের লোক গিয়ে তা বন্ধ করে দিয়েছে।