পোশাক শ্রমিকদের পাশে থেকে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন: মালিকদের উদ্দেশ্যে কাদের


রাপ্র ডেস্ক: করোনা সংকটে শ্রমিকদের পাশে থেকে পোশাক শিল্পের মালিকদের উদার দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে বলেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেছেন, ‍‘এ সংকটে পোশাকশিল্পের মালিকগণ উদার মানসিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন- বলে আমার বিশ্বাস। আপনারা জানেন শেখ হাসিনা সরকার আপনাদের পাশে রয়েছেন। আপনারা শ্রমিক ভাই-বোনদের পাশে থাকুন। প্রতিশ্রুতি রক্ষা করুন। শ্রমিক ছাঁটাই ও ফ্যাক্টরি লে-অফ ঘোষণা যারা করছে, তারা এক কাজ থেকে বিরত রাখুন।’

শনিবার ( ২ মে) এক ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তৈরি পোশাক কারখানাগুলো চালু করার আগে মালিকরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, এই সংকটে কোন প্রকার শ্রমিক ছাঁটাই, লে-অফ করা হবে না। ঢাকায় অবস্থানরত শ্রমিকদের দিয়ে ফ্যাক্টারি পরিচালনা করবে। বিভিন্ন জেলা বা গ্রামে অবস্থানরত শ্রমিকদের বেতনের একটি অংশ দেয়া হব। তাদের ঢাকায় আসতে নিরুৎসাহিত করা হব। প্রকৃতপক্ষে আমরা দেখছি দলে-দলে প্রতিদিন বিভিন্ন উপায়ে শ্রমিকরা ঢাকায় ফিরছেন, তারা বলছেন তাদেরকে অফিস থেকে ডাকা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আবার গতকাল শুনলাম গাজীপুরে একটি কারখানায় লে-অফ ঘোষণা করা হয়েছে, শ্রমিক ছাঁটাই করা হয়েছে। এটা তো হওয়ার কথা ছিল না। সরকার এ খাতের সুরক্ষায় ইতোমধ্যে নিম্ন সুদে প্রণোদনাসহ তাদের রফতানি আদেশ অব্যাহত রাখতে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে।’

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘জেলা প্রশাসন বা উপজেলার মাধ্যমে, তালিকা অনুযায়ী যে ত্রাণ কার্যকর্ম চলছে; তাতে পরিবহনসহ অন্যান্য শ্রমিকদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে। জেলা প্রশাসন আশা করি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখবেন।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ইতোমধ্যেই শেখ হাসিনার সরকার ব্যাংকিংসহ করোনা সংকটে যারা সংশ্লিষ্ট তাদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা ঘোষণা করেছে। আমি মনে করি সুযোগ বড় কথা নয়, তাদের মনোবল এবং সেবার মানসিকতাই আমাদের জন্য অসীম আঁধারে সাহসের আলোক শিখা। ফ্রন্টলাইনে করোনা যোদ্ধাদের মধ্যে বাংলাদেশ পুলিশের একজন সাব ইন্সপেক্টরসহ সহ চারজনের মধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন; আমি তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।’

সড়কমন্ত্রী বলেন, ‘আমি করোনা আক্রান্তদের আরোগ্য কামনা করছি। ফ্রন্টলাইন যোদ্ধাদের মধ্যে চিকিৎসক-নার্স টেকনোলজিসহ স্বাস্থ্যকর্মীগণ যে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন সেজন্য তাদের জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। আমরা এরই মধ্যে হারিয়েছি একজন চিকিৎসক, একজন স্বাস্থ্যকর্মী, একজন সাংবাদিক এবং একজন ব্যাংকারকে; তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘পাশাপাশি মাঠ প্রশাসনে কর্মরত বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা জরুরি সেবা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মী, গণমাধ্যম, পুলিশ-সেনাবাহিনী, র‍্যাবসহ যারা সামনের সারিতে থেকে করোনা বিরোধী লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন, তাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। দেশ ও জাতির সংকটকালে যারা নিবেদিত প্রাণ, নিশ্চয়ই জাতি তাদের যথাযোগ্য সম্মান প্রদর্শন করবে৷’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘করোনা মোকাবিলায় চিকিৎসা ক্ষেত্রে সরকারের টেস্টিং ক্যাপাসিটি এখন অনেক বেড়েছে। অনেকে লক্ষণ দেখা দিলেও টেস্ট না করিয়ে গোপন রাখছে। এতে বিপদ ডেকে আনছেন। লক্ষণ প্রকাশ পেলে সাথে-সাথে হেল্পলাইন বা হটলাইনে যোগাযোগ যেন ভুল না হয়। এটা সবাইকে লক্ষ্য রাখতে অনুরোধ করছি। করোনা সংকট মোকাবিলায় বিভিন্ন কার্যক্রম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সার্বক্ষণিক মনিটর করছেন। প্রয়োজনানুযায়ী তাৎক্ষণিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। তার উপর আস্থা রাখুন, আল্লাহর উপর ভরসা রাখুন; ইনশাল্লাহ করোনা যুদ্ধের জয় আমাদের হবেই।’