বধ্যভূমি মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধের উদ্বোধন ও শহীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ


নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী মহানগরীর পদ্মা নদীর নিকটস্থ টি বাঁধ সংলগ্ন বাবলাবন বধ্যভূমি মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ এর উদ্বোধন করা হয়েছে। সোমবার সকাল ১১টায় ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে স্মৃতিসৌধ এর উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের উদ্বোধক জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামানেরপুত্র রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন।

উদ্বোধনের পর স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি অপর্ণ করেন রাসিক মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন ও রাজশাহী-০২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশাসহ বীর মুক্তিযোদ্ধারা। পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের পর শহীদদের স্মরণে এক মিনিটি নীরবতা পালন ও তাদের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। এরপর বিভিন্ন সংগঠন ও শ্রেণীপেশার শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ‘মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থানসমূহ সংরক্ষণ ও মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বধ্যভূমি মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করেছে এলজিইডি রাজশাহী। স্মৃতিসৌধ উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধন রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, হানাদারবাহিনী তাদের নিশ্চিত পরাজয় বুঝতে পেরে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করতে স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার-আলবদরবাহিনীর সহযোগিতায় আত্মসমর্পণের প্রাক্কালে দেশের প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিল্পীসহ বহু গুণীজনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এ থেকে বোঝা যায় পরাজয়ের শেষ মুহুর্তেও রাজাকার-আলবদর বাহিনী দেশের বিরুদ্ধে কর্মকা- পরিচালনা করে গেছে। এমনকি স্বাধীনতার পর তারা সক্রিয় থেকেছে।

তারা মানুষ না, তারা মানুষ নামের কলঙ্ক। রাজাকার-আলবদরবাহিনীর উত্তরসূরীরা এখনো দেশের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তাদেরকে শেকড় থেকে উচ্ছেদ করতে হবে। স্বাধীন দেশে স্বাধীনতাবিরোধীদের কোন স্থান হবে না। মেয়র আরো বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা বঙ্গবন্ধুর যে স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার জন্য জীবন দিয়ে গেছেন, সেই সোনার বাংলা গড়ছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে আগামী কয়েক বছর পর আমরা আমাদের কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারবো।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রাজশাহী-০২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস বাঙালি জাতির বেদনাবিধুর দিন। সেই দিনে আমরা বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য স্মৃতিসৌধের উদ্বোধন করছি। এটি ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন হয়ে থাকবে।

এমপি ফজলে হোসেন বাদশা আরো বলেন, আজকে এই বধ্যভূমিতে দাঁড়িয়ে বলতে চাই, যারা এখনো পাকিস্তানের দিকে তাকিয়ে থাকেন, মনে করেন পাকিস্তানের ধারায় দেশ পরিচালিত হবে, তারা মীর জাফর। বঙ্গবন্ধুর কথা মতো, তাঁর আদর্শ অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার সঠিকপথে দেশকে পরিচালিত করছে, আগামীতেও করবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন এলজিইডি রাজশাহীর নির্বাহী পরিচালক মো. সানিউল হক।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর রুহুল আমিন প্রামাণিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুর রহমান রাজা, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফিজুর রহমান খান আলম। অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র-১ ও ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সরিফুল ইসলাম বাবু সহ অন্যান্য কাউন্সিলর ও কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।