বরেন্দ্র এলাকায় ধানচাষে পানির ব্যবহারে সাশ্রয়ী পদ্ধতি নিয়ে কর্মশালা


স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে বরেন্দ্র এলাকায় ধানচাষে পানির ব্যাবহার সাশ্রয়ী করতে শুকনো “সেচ পদ্ধতির স্কেলিং” বিষয়ে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (০৯ মে) দুপুরে রাজশাহী গ্যান্ড রিভারভিউ হোটেলে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং টাফ্টস বিশ্ববিদ্যালয় যৌথ আয়োজনে কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়। বিএমডিএ’র নির্বাহী পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ আব্দুর রশীদ এর সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএমডিএ’র চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য বেগম আখতার জাহান।

এসময় প্রধান অতিথি বিএমডিএ চেয়ারম্যান বলেন, আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরন করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি, স্বাধীনতার মহান স্থাপতি, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তিনি ছিলেন বাঙালি জাতির ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ মহানায়ক। তিনি তাঁর জীবনের প্রজ্জ্বলিত আলো দিয়ে বাঙালি জাতির জীবনে আলো জ্বালিয়েছেন। আমরা পেয়েছি আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশ, পেয়েছি লাল সবুজের পতাকা। আমি জাতির পিতাসহ তাঁর পরিবারের সকল শহীদদের বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরন করছি।

বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কৃষি খাতের অন্যতম একটি সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান হিসাবে বরেন্দ্র অঞ্চলের মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নসহ সারা বাংলাদেশের খাদ্যের যোগান বৃদ্ধির জন্য এই পানি নিয়েই নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। অডউ পদ্ধতি পুরাতন হলেও সেচের পানি সাশ্রয়ের জন্য কার্যকরী একটি পদ্ধতি। প্রচলিত পদ্ধতির তুলনায় এ পদ্ধতিতে পানি সাশ্রয় হয়, জ্বালানী সাশ্রয় হয়, সেচ খরচ কমে, ফলন বেশী হয়, সর্বপরি এটি একটি পরিবেশ বান্ধব পদ্ধতি।

গবেষণা ফলাফলেও উঠে এসেছে বিএমডিএ’র অধিকাংশ গভীর নলকুপ হতে কৃষকরা প্রিপেইড মিটারের মাধ্যমে সিরিয়ালে একের পর এক সেচের পানি গ্রহণ করে থাকেন। সুতরাং সেখানে অডউ পদ্ধতির প্রয়োগ খুবই কার্যকরী হবে। আমি এখানে যে কথাটা যোগ করতে চাই তা হলো প্রাকটিক্যালি অডউ পদ্ধতি প্রয়োগ করা অবশ্যই অতি উত্তম, কেননা এটি পরিক্ষীত একটি পদ্ধতি। বিএমডিএ তিন দশক ধরে স্কিমভূক্ত অনেক জমিতে পরীক্ষা মুলক ভাবে অডউ পদ্ধতিতে সেচ প্রদান করেছেন, নানা ভাবে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।

কৃষকরা বর্তমানে কম পানি গ্রহণে অনেকটা অভ্যস্থ। প্রিপেইড মিটারের কারনেও তারা বর্তমানে কম পানি গ্রহণ করে থাকেন। যার ফলশ্রুতিতে ১ কেজি ধান উৎপাদনে যেখানে ৩০০০ লিটার পানি ব্যবহৃত হত, বর্তমানে সেখানে ১২০০-১৫০০ লিটার পানি লাগে। তাই কর্মশালায় যে সমস্ত সুপারিশ উঠে এসেছে তা অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুন্দর পৃথিবী গড়ে তোলার লক্ষ্যে পরিবেশ সহনীয় কার্যকরী এ প্রযুক্তি বরেন্দ্র অঞ্চলকেই সমৃদ্ধ করবে।

আপনাদের মূল্যবান মতামত মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়নের মাধ্যমে আগামী দিনের বরেন্দ্র অঞ্চল আরো সুন্দর, নির্মল ও স্বাস্থ্যকর হবে এ আশাবাদ ব্যক্ত করে আপনাদের প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কর্মশালায় স্বাগত মন্তব্য ও পটভূমি আলোচনা করেন ডক্টর হুমনাথ ভান্ডারী আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ।

এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান সদস্য বিশেষজ্ঞ পুল, কৃষি মন্ত্রণালয়, ডাঃ মোঃ আব্দুস সালাম সদস্য পরিচালক (শস্য) বিএআরসি, মোসাঃ উম্মে সালমা উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডিএই, রাজশাহী। কর্মশালায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন, অধ্যাপক ডাঃ উজ্জয়ন্ত চক্রবর্তী এবং ডাঃ কাইল এমেরিক (অনলাইন)। এছাড়াও কর্মশালায় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ), কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই), বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি), কৃষক, টিউবওয়েল অপারেটর ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।