বিচারক ও আইনজীবীদের মধ্যে সুসম্পর্ক রাখতেই হবে -আইনমন্ত্রী


নাটোর প্রতিনিধি: আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য উকিল আব্দুস সাত্তারের বিষয়ে বলেছেন, সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে উকিল আব্দুস সাত্তারের সম্মানে কোন প্রার্থী দেয়নি আওয়ামী লীগ। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাকে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হবে কি না তা নির্ধারণ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাদের মনোনয়নের ব্যাপারে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। আগামীতে এ আসন থেকে যদি দলের ত্যাগী কোনো নেতা মনোনয়ন চান তবে উকিল আব্দুস সাত্তার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন না।
বৃহস্পতিবার(২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে তিনটায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি অনুদানে নাটোর জেলা আইনজীবী সমিতির নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, বেঞ্চ ও বার একই পাখির দুই ডানা। বিচারক ও আইনজীবীদের মধ্যে সুসম্পর্ক রাখতেই হবে। তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক না থাকলে বিচারপ্রার্থীরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হবে। প্রধানমন্ত্রী সবসময় মানুষের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির বিষয়ে অত্যন্ত সজাগ।
তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় সরকার শুধু রুটিন দায়িত্ব পালন করবে। নির্বাচন আয়োজন থেকে সম্পন্ন করবে নির্বাচন কমিশন। সরকার নির্বাচন কমিশনকে প্রয়োজনীয় সকল সহায়তা করতে প্রস্তুত আছে।
আইনমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন দেশে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংবিধান উপহার দেন। এর মাধ্যমে তিনি দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার প্রথম বৃক্ষ রোপণ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে অনুসরণ করে তাঁর যোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা বিচার ব্যবস্থার উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আইনজীবীদের কল্যাণে বিশেষ বরাদ্দ প্রদান, বার ভবনের অবকাঠামো উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর সজাগ দৃষ্টি রয়েছে।
তিনি করোনার শুরুতেই মাত্র সাতদিনে ভার্চুয়াল আদালত আইনের প্রবর্তন করেন। প্রবর্তিত ভার্চুয়াল আদালতের মাধ্যমে দেড় লক্ষাধিক মামলার নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়েছিল। ভার্চুয়াল আদালতে তিন লাখ ৫৯ হাজার ব্যক্তির জামিন মঞ্জুর হওয়ায় কারাগারগুলোর বন্দি ধারণ ক্ষমতা সহনীয় পর্যায়ে রাখা সম্ভব হয়েছিল।
আনিসুল হক বলেন, ইউএনডিপি ভবিষ্যৎবাণী করেছিল, এদেশে ২০ লাখ মানুষ কোভিড-১৯ সংক্রমণে মারা যাবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে দ্রুততম সময়ের মধ্যে টিকার ব্যবস্থা করে মহামারি প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে। এ পর্যন্ত মাত্র ২৯ হাজার মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষকে এক লাখ ৮৩ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্রদান করায় কোন মানুষ না খেয়ে মারা যায়নি। অথচ যুক্তরাষ্ট্র, কানাডার মতো উন্নত দেশ এই মহামারিতে হিমশিম খেয়েছে।
আইনমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উপনীত হয়েছে, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হবে। এমনকি শত বছরের ব-দ্বীপ পরিকল্পনাও প্রণয়ন করা হচ্ছে। সারা বিশ্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। এগিয়ে যাবে দেশ, কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট জুডিশিয়ারি প্রতিষ্ঠা করা হবে। এই লক্ষে দুই হাজার ২০০ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে দেশের মানুষকে মুক্ত করে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি রুহুল আমিন তালুকদার টগরের সভাপতিত্বে এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল, নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল, আইন সচিব গোলাম সারওয়ার, জেলা ও দায়রা জজ শরীফ উদ্দিন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সাজেদুর রহমান খাঁন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান, পাবলিক প্রসিকিউটর সিরাজুল ইসলাম, সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল মালেক শেখ প্রমুখ।