মানুষের সেবা ও ভালবাসার আরেক নাম “শিবগঞ্জ হেল্পলাইন”


ফয়সাল আজম অপু: চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় আনলাইন ভিত্তিক সেচ্ছাসেবী সংগঠন ’’শিবগঞ্জ হেল্পলাইন’’ করোনার দিনগুলোতে রক্তদান, অসহায় মানুষের জন্য খাদ্যসামগ্রী বিতরণসহ সংগঠনের নানাবিধ কার্যক্রমে গোটা এলাকার মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে অতি অল্পসময়েই। শিবগঞ্জ উপজেলা সহ অত্র জেলায় রক্তের প্রয়োজনে সংগঠনের গ্রুপে কেউ পোষ্ট করলে বা কারো জরুরী রক্তের প্রয়োজনে সেচ্ছাসেবী সংগঠন ’’শিবগঞ্জ হেল্পলাইনে’র পরিচালক ডাকে সেচ্ছায় রক্তদানে একঝাঁক তরুন রক্তযোদ্ধারা মানুষের জীবন বাঁচাতে সর্বদাই সবার আগে এগিয়ে আসছে। 

 শুধু রক্তদান নয় সামাজ সেবায় এগিয়ে যাচ্ছে সংগঠনের কার্যক্রম দুর্বার গতিতে।প্রানঘাতি করোনা ভাইরাসের মধ্যেও একঝাঁক তরুন স্বেচ্ছাসেবী সমণ্বয়ে দ্রুত এগিয়ে চলছে ’’শিবগঞ্জ হেল্পলাইন’’ সংগঠনের কার্যক্রম।করোনার দিনগুলোতে সংগঠনের সেচ্ছাসেবীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়েও শিবগঞ্জ উপজেলাই কর্মহীন অসহায় মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ,সহ নানা মানব সেবায় কাজ করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে সংগঠনের সেচ্চাসেবীদের কিছু জমানো টাকা থেকে উপজেলার বিভিন্ন মহল্লার হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। 

 ইতিমধ্যে রক্তদানের জন্য সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার মাত্র ৫ মাসেই সুনাম সর্বত্রই সংগঠনটির। বর্তমান পরিচালক মোঃ সিফাতুল্লাহ বলেন, স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করা আমার স্বপ্ন। আমি চাই সমাজকে নতুন কিছু উপহার দিতে। আমাদের দেশে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সমাজের তরুণরা স্বেচ্ছাসেবী কাজে এগিয়ে আসছে। তরুণরাই পারে সমাজকে বদলে দিতে।স্বেচ্ছাসেবার মাধ্যমে পরিতৃপ্তি লাভের কথা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন যখন মানুষের জন্য কিছু করতে পারি তখন তৃপ্তি পাই। মানুষের পাশে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো। তাছাড়াও বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কার্যক্রমেও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। তন্মধ্যে, মুমূর্ষু রোগীর জন্য রক্ত সংগ্রহ, ছিন্নমূল শিশুদের শিক্ষাদান, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ক্যাম্পেইন এবং শীত বস্ত্র বিতরণ উল্লেখযোগ্য।’স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন নিয়ে স্বপ্নের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন, ‘কীভাবে মানুষের জন্য কাজ করব, অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াবো, স্কুলগামী নয় এমন শিশুদের স্কুলগামী করবো তার স্বপ্ন দেখি। খবরের কাগজ খুললেই চোখে পরে অনেক স্থানে বাল্যবিবাহ হচ্ছে। 

 

অনেক শিশু ও তরুণী ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। এসব বন্ধের জন্য মানুষকে সচেতন করার স্বপ্ন দেখি। আমার বিশ্বাস সমাজের তরুণরা এগিয়ে আসলে এসব বন্ধ করা সম্ভব হবে। এভাবেই একদিন সফলতা আসবে এবং গড়ে উঠবে সুন্দর আগামী। তিনি আরও জানান, দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে দেশের মানুষের জন্য কিছু করতে পেরে সত্যিই আমরা গর্বিত। সরকারের পাশাপাশি সবাই যার যার অবস্থান থেকে যদি এ সকল অসহায় মানুষের পাশে এসে দাঁড়ায় তবে অচিরেই এ দুর্যোগ থেকে আমরা পরিত্রাণ পাব। বর্তমানে এটি সকলের সংগঠন হতে চলেছে। সকলের দোয়া, সহযোগিতা ও ভালোবাসায় আগামী দিনগুলোতেও এভাবে চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ সারা বাংলাদেশের অসহায় মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাবে এ সংগঠনটি। 

 

 এ ব্যাপার ডা. আবু তাহির বলেন, করোনা প্রাদুর্ভাবে জনজীবন যখন স্থবির তখন শিবগঞ্জ কিছু তরুণ তরুণী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানবতায় এগিয়ে এসেছেন, শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিতসহ সামাজিক অনেক কাজ করছেন তারা। করোনার ভয়াবহতা সম্পর্কেও মানুষকে সজাগ করছেন। এক কথায় মানবতার সেবায় এগিয়ে এসেছেন তারা। তিনি বলেন, করোনা মোকাবিলায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পাশাপাশি বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এগিয়ে এসেছে। 

 

তারাও আমাদের সঙ্গে কাজ করছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সহযোগিতা করছে, প্রচার-প্রচারণা ও মাস্ক-স্যানিটাইজার দিয়ে মানুষকে সচেতন করছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে মানুষকে আহ্বান করছে যা, একটি ভালো উদ্যোগ। করোনা মোকাবিলায় তাদেরও ভূমিকা আছে। উল্লেখ্য, শিবগঞ্জ উপজেলার তরুণদের নিয়ে গঠিত সংগঠন “শিবগঞ্জ হেল্পলাইন” মাদক বিরোধী প্রচারণা ও প্রতিবাদ, রক্তদান কর্মসুচী, এলাকা অসহায় দুঃস্থদের সহায়তা প্রদানসহ বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।