রাজশাহীতে আক্রান্ত প্রথম স্বাস্থ্যকর্মী শনাক্ত


নিজস্ব প্রতিবেদক : সর্বশেষ মঙ্গলবার পরীক্ষা করা নমুনার মধ্যে রাজশাহীর চার জনের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এই নমুনাগুলো পরীক্ষা করা ঢাকায়। রাতেই ঢাকা থেকে রাজশাহীর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ছাড়াও জেলা প্রশাসনকে জানিয়ে দেয়া হয়। এ নিয়ে রাজশাহীতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ জনে।

নতুন চার জন আক্রান্তদের মধ্যে একজন রয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মী। তিনিই রাজশাহীর আক্রান্ত প্রথম স্বাস্থ্যকর্মী। মোছা: মাহমুদা বেগম নামের ৫০ বছর বয়সের এই স্বাস্থ্যকর্মী পবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত। তিনি হেড নার্সের দায়িত্ব পালন করছেন। তার পরিবারের সদস্য সংখ্যা চার জন। তাদের নিয়ে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোয়ার্টারে থাকেন। তবে তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া উৎস এখনো জানা যায়নি।

জানা গেছে, হেড নার্স মাহমুদা বেগম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সব স্থানে যাতায়াত ছিল। এ জন্য বুধবার পবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স লকডাউন ঘোষণা করা হবে। একই সঙ্গে সম্প্রতি তার সংস্পর্শে যারা এসেছেন তাদের কোয়ারেন্টিনে নেয়াসহ নমুনা সংগ্রহ করা হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।

মঙ্গলবার রাতে রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচলক ডা. গোপেন্দ্র নাথ আচার্য্য সাংবাদিকদের বলেন, রাজশাহী থেকে বেশ কিছু নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছিল। সেগুলো আজ পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্য রাজশাহীর চার জনের নমুনা পজেটিভ এসেছে। গত ২২ এপ্রিল এই নমুনাগুলো ঢাকায় পাঠানো হয়েছিল।

রাতে রাজশাহী জেলা প্রশাসক হামিদুল হক জানান, ঢাকায় পাঠানো নমুনা থেকে রাজশাহীর চার জনের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে মোহনপুরের ২ জন, তানোরে ১ জন ও পবায় ১ জন। এদের মধ্যে পবার আক্রান্ত একজন স্বাস্থ্যকর্মী।

রাজশাহীতে নতুন আক্রান্ত অপর তিনজন হলেন, মোহনপুর উপজেলার কেশরহাট পৌরসভার তসোপাড়া গ্রামের খয়বর রহমানের ছেলে ফারুক হেসেন (২৮), এই উপজেলার হরিদাগাছি গ্রামের আবুল কালাম আজাদের ছেলে আলামীন (২৫) ও তানোর উপজেলার বাধাইড় ইউনিয়নের হাপানিয়া দোগাছী গ্রামের জার্জিসের ছেলে নসিব (২০)।

এদের মধ্যে মোহনপুরের ফারুক হোসেন ঢাকায় বেসরকারি কোম্পানিতে ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ার পদে কর্মরত ছিলেন। গত ১১ এপ্রিল তিনি বাড়ি ফিরেন। তিনিসহ তার পরিবারের তিন সদস্য বর্তমানে অসুস্থ্য রয়েছেন বলে জানা গেছে।

অপরজন আলামীন গাজীপুরে পোষক কারখানায় কর্মরত। গত ৬ এপ্রিল তিনি বাড়ি আসেন। আর তানোরের নসিব লকডাউনের আগে চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়েছিলেন। গত ২২ এপ্রিল ভারত থেকে এসে তিনি অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। ওই দিন তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

রাজশাহীতে গত ১২ এপ্রিল প্রথম করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) রোগী শনাক্ত হয়। সর্বশেষ গত ২৮ এপ্রিল চার জন আক্রান্ত রোগি শনাক্ত হওয়ার পর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে ছয় জন নারী ও সাত জন পুরুষ। এদের মধ্যে পুঠিয়া উপজেলায় পাঁচজন, বাগমারায় একজন, মোহনপুরে চার জন ও বাঘা উপজেলায় এক জন, তানোরে এক জন ও পবায় এক জন। এদের মধ্যে রোববার সকালে বাঘার আব্দুস সোবহান মারা যান।