রৌমারীতে লজিক প্রকল্পের সুফল পাচ্ছেন জনগণ


মাজহারুল ইসলাম.রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: রৌমারীতে লজিক প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে তৃনমূল জনগণ এর সুফল পাচ্ছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়িত লোকাল গভর্নমেন্ট ইনিশিয়েটিভ অন ক্লাইমেট চেইঞ্জ (লজিক) প্রকল্পের আওতায় রৌমারী উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে ৯৭,৭৫,০০০/- (সাতানব্বই লক্ষ পঁচাত্তুর হাজার) টাকার ১৫টি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়।

নির্বাচিত ঠিকাদারদের মাধ্যমে বাস্তবায়িত এসব প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নে শামছুলের বাড়ী থেকে জিরো পয়েন্ট (ডিগ্রীর চরের ডাঃ হামিদের বাড়ী থেকে উত্তরে শামছুলের বাড়ী) পর্যন্ত রাস্তায় মাটি ভরাট ও বৃক্ষরোপন (বাসক পাতার চারাসহ), বদির মোড় থেকে শালু মোড় পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে বৃক্ষরোপন (বাসক পাতার চারাসহ), হাজীর হাটে একটি দুই কক্ষ বিশিষ্ট পাবলিক টয়লেট ও একটি টিউবওয়েল স্থাপন, মুখতোলা জাবেদ আলীর বাড়ীর সামনে ২৫০ ফিট গাইডওয়াল নির্মাণ, শৌলমারী ইউনিয়নে চেংটাপাড়া কছব উদ্দিনের বাড়ী থেকে রহিম বাদশার বাড়ীর মাঝখানে একটি রিং কালভার্ট নির্মাণ ও রাস্তার দুই ধারে বৃক্ষরোপন, টালুয়ার চর থেকে ইউপি রাস্তার লাল মিয়ার বাড়ী হইতে উত্তর দিকে বাদশার বাড়ী পর্যন্ত ৫০০ মিটার রাস্তা ৫ফুট উচুকরণ ও বৃক্ষরোপন (বাসক পাতার চারাসহ), বাতারগ্রাম ডিসি রাস্তার লাল মিয়ার বাড়ীর নিকটে একটি রিং কালভার্ট নির্মাণ, কলমের চর করিম আর্মির পুকুরের ধারে ২০০ ফিট গাইডওয়াল নির্মাণ, বন্দবেড় ইউনিয়নে টাপুরচর আশ্রয় কেন্দ্রে ২টি তিন কক্ষ বিশিষ্ট টয়লেট ও ৪টি টিউবওয়েল স্থাপন, জন্তির কান্দা মোজাম্মেলের বাড়ী থেকে শফিকুলের বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ ও মোজাম্মেলের বাড়ীর পাশে রিপর‌্যাফ নির্মাণ, চর বন্দবেড় খালেকের বাড়ি থেকে ছামছুলের বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা ৩ফুট উচুকরণ ও বৃক্ষরোপন, রৌমারী ইউনিয়নের পূর্ব ইছাকুড়ি রহমত আলীর বাড়ী হতে নাবুর বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা ৩ফিট উচুকরণ ও বৃক্ষরোপন, চর বামনের চর আশ্রয় কেন্দ্রে তিন কক্ষ বিশিষ্ট ২টি টয়লেট ও ৪টি টিউবওয়েল স্থাপন, কান্দাপাড়া নুর মোহাম্মদের বাড়ী হইতে কান্দা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তা ৩ফিট উচুকরণ, দুই পয়েন্টে গাইডওয়াল নির্মাণ এবং রাস্তার দুই ধারে বৃক্ষরোপন (বাসক পাতার চারাসহ), পশ্চিম ইজলামারীতে একটি রিং কালভার্ট, পূর্ব ইজলামারীতে একটি রিং কালভার্ট এবং পূর্ব ইজলামারী আজাদ মেম্বারের বাড়ীর সামনে একটি রিং কালভার্ট নির্মাণ।

সরেজমিনে পরিদর্শনকালে দেখা যায় রাস্তা মেরামত ও বৃক্ষরোপন প্রকল্পগুলি বিগত বন্যায় খানিকটা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। রিপর‌্যাফ নির্মাণ, গাইডওয়াল নির্মাণ ও কালভার্ট নির্মাণের ফলে বিগত বন্যায় সংশ্লিষ্ট রাস্তাগুলি ভাঙ্গেনি যার ফলে ফসলী জমির পানি নিষ্কাশন ও জনচলাচলের পথ সুগম হয়েছে।

রৌমারী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড সদস্য জনাব মো. জোনাব আলী বাদশা জানান যে, ইজলামারী গ্রামের তিনটি পয়েন্টে লজিক প্রকল্পের মাধ্যমে ৩টি রিং কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে যার ফলে বন্যায় অবাধ পানি চলাচলের কারণে রাস্তা ভাঙ্গেনি এবং বন্যার পর খুব সহজেই পানি নেমে যাওয়ায় ফসলী জমির অনেক উপকার হয়েছে। হাজীর হাটের ব্যবসায়ীরা জানান, এখানে একটি পাবলিক টয়লেট হওয়ার কারণে এখন হাটে আগত ব্যক্তিদের জরুরী প্রয়োজনে তারা তা ব্যবহার করতে পারছে।

  বন্দবেড় ইউপি চেয়ারম্যান জনাব মো. কবির হোসেন জানান, বন্দবেড় ইউনিয়নের টাপুরচর আশ্রয় কেন্দ্রে ২টি টয়লেট ও ৪টি টিউবওয়েল স্থাপনের ফলে সেখানকার গরীব জনগণ এর সুফল পাচ্ছেন। এছাড়া জন্তির কান্দা গ্রামে মোজাম্মেলের বাড়ীর সামনে একটি গাইডওয়াল নির্মাণের জন্য প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছিল কিন্তু গাইডওয়াল নির্মাণের স্থানে পানি ও গভীরতা বেশি হওয়ায় সেখানকার জনগণের চাহিদা অনুযায়ী গাইডওয়াল নির্মাণ প্রকল্পটি বাদ দিয়ে সেখানে রিপর‌্যাফ নির্মাণ করা হয়েছে। যার ফলে বন্যার পরও রাস্তাটি টিকে আছে।

চর বামনের চর আশ্রয় কেন্দ্রের বাসিন্দা আব্দুছ ছামাদ জানান ‘আমরা গবীর মানুষ। পাকা পায়খানা দেয়ার সামর্থ্য আমাদের নাই। সরকার এখানে দুটি পায়খানা ৪টি টিউবওয়েল নির্মাণ করে দিয়েছে যার ফলে আমরা উপকার পাচ্ছি’।

লজিক প্রকল্পের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আল ইমরান জানান , জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে সৃষ্ট বন্যা ও জলবদ্ধতা নিরসন এবং স্থানীয় জনগণের জানমালের উন্নয়নের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক লজিক প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে প্রকল্পগুলির কাজ যথাযথভাবে সমাপ্ত হয়েছে যার ফলে স্থানীয় জনগণ এর সুফল পাচ্ছেন।

লজিক প্রকল্পের মাধ্যমে বাস্তবায়িত প্রকল্পগুলির কারণে তৃনমূল জনগণের অনেক উপকৃত হচ্ছে। পরবর্তীতে লজিক প্রকল্পের বরাদ্দ বৃদ্ধি করে আরো বেশি কাজ বাস্তবায়নের জন্য এলাকাবাসী উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করেন। জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে সৃষ্ট বন্যা ও জলাবদ্ধতা নিরসনসহ লজিক প্রকল্পের মূল্য উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য রৌমারী উপজেলার ৬টি ইউনিয়নেই এ প্রকল্পের কাজ সম্প্রসারণ করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানগণ জোর দাবী করেন।