করোনা মোকাবিলায় ভারতকে বাড়তি সহায়তার আশ্বাস যুক্তরাষ্ট্রের


মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। ছবি : রয়টার্স

ভারতে ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে অবশেষে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের জো বাইডেনের প্রশাসন। দীর্ঘদিন ধরে ভারত করোনাভাইরাসের টিকা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচমাল সরবরাহের অনুরোধ করার পর বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারতকে বাড়তি সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

বাংলাদেশ সময় আজ রোববার সকালে এক টুইটে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেন, ‘কোভিড-১৯-এর ভয়ানক প্রাদুর্ভাবের মধ্যে ভারতের মানুষের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করছি। ভারত সরকারে আমাদের সহযোগীদের সঙ্গে একান্তভাবে কাজ করছি। ভারতবাসী এবং ভারতের স্বাস্থ্যসেবা খাতের নায়কদের জন্য আমরা দ্রুততার সঙ্গে বাড়তি সহায়তা দিয়ে যাব।’

যদিও বাইডেন প্রশাসনের এমন ‘পাশে দাঁড়ানোর’ আশ্বাস পেতে নয়াদিল্লিকে রীতিমতো কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। রপ্তানিতে মার্কিন প্রশাসনের বিধিনিষেধের কারণে ভারত কাঁচামাল পাচ্ছিল না। এর ফলে ৩৫টিরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রীর জোগানে প্রভাব পড়ে। এসব সামগ্রী বায়োলজিক্যাল-ই ও কোভিশিল্ডের উৎপাদক সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার (এসআইআই) মতো সংস্থা ব্যবহার করে। সেরামের কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, কোভিশিল্ড ও নোভাভ্যাক্স উৎপাদনের জন্য সেই কাঁচামালের প্রয়োজন আছে।

 

যদিও সেরামের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আদর পুনেওয়ালা দাবি করেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের টালবাহানার কারণে কোভিশিল্ডের উৎপাদনে কোনো প্রভাব পড়ছে না। তবে ব্যাহত হচ্ছে নোভাভ্যাক্সের উৎপাদন। এমন পরিস্থিতিতে ভারত করোনাভাইরাসের টিকা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচমাল সরবরাহের জন্য দীর্ঘদিন ধরে অনুওরোধ জানাচ্ছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন খোদ পুনেওয়ালাও।

 

বিষয়টি অবগত আছেন এমন কর্মকর্তারা জানান, গত সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার সময় কাঁচামাল পাঠানোর বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সেই অনুরোধের ভিত্তিতে মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয় যে, সমাধানসূত্র বের করতে বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

 

নভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপে ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ভারত। একদিনে শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়িয়ে যাচ্ছে আগের দিনের সংখ্যাকে। ফলে ভঙ্গুর হয়ে পড়ছে ভারতের চিকিৎসাব্যবস্থা। দেখা দিয়েছে তীব্র মাত্রায় অক্সিজেন সংকট। অক্সিজেন সংকটে দেশটিতে অনেক রোগীর মৃত্যু হচ্ছে বলেও উঠে এসেছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে।

 

গত তিন দিনে ভারতে ১০ লাখের বেশি মানুষের করোনা ধরা পড়েছে এবং সাড়ে সাত হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

 

ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শনিবার দেশজুড়ে তিন লাখ ৪৯ হাজারের বেশি মানুষের করোনা শনাক্ত হয় এবং এদিন করোনায় মৃত্যু হয়েছে দুই হাজার ৭৬০ জনের।

 

এর মধ্য দিয়ে টানা চতুর্থ দিন ভারতে তিন লাখের বেশি মানুষের করোনা শনাক্ত হলো আর মৃতের সংখ্যা দুই হাজারের বেশি রয়েছে টানা পাঁচদিনের মতো।