গোদাগাড়ীতে মাদ্রাসার ছাত্রকে বেধরক মারধরের অভিযোগ


গোদাগাড়ী (রাজশাহী) প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার ফরাদপুর এলাকায় অবস্থিত তারতিরুল কুরআন হাফেজিয়া মাদ্রাসার ছাত্র সাহারিয়ার আলম (১০) কে মাদ্রাসার হুজুর হাফেজ আল আমিন বেধরক মারধর করে গুরত্বর আহত করেছে বলে ওই ছাত্র ও তার পরিবার অভিযোগ করেছে। আহত ছাত্র সাহারিয়ার আলম রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১ নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আহত ছাত্র উপজেলার রাজাবাড়ী তালধারী এলাকার লিমনের ছেলে।

আহত ছাত্রের চাচা সাব্বির হোসেন বলেন, ১৯ আগষ্ট সকালে পড়ার পর থাওয়ার জন্য ডাকলে লেবু খেয়ে যেতে দেরি হওয়ায় হাফেজিয়া মাদ্রাসার হুজুর হাফেজ আল আমিন তার বুকে কিলঘুসি মারে। দুপুরে খাওয়ার পর সাহারিয়ার আলমের ঘুম থেকে উঠতে দেরি করায় ও পড়া না পাড়ার কারনে হুজুর হাফেজ আল আমিন লাথি, কিল ঘুষি মারতে থাকে। এতে সাহারিয়ার আলম শুয়ে পড়লে হুজুর তার দুই পা উপর দিক করে পিঠের উপর বেধরক লাথি মারতে থাকে।

পরেরদিন ফরাদপুর এলাকায় আমার আত্বিয় ছাত্র সাহারিয়ার আলম তার খালার বাড়ী খেতে গিয়ে শুয়ে পড়ে। তার এ অবস্থা দেখে ২০ আগষ্ট তাকে গোদাগাড়ী উপজেলা (প্রেমতলী) স্থাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার চিকিৎসা দেওয়ার পর তাকে বাড়ী নিয়ে চলে আসা হয়। আমরা তার অবস্থা এত গুরত্ব বুঝতে পারিনি। তার অবস্থা বেগতিক হলে পুনরায় ২৩ আগষ্ট উপজেলা (প্রেমতলী) স্থাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার এ বিষয়টি পুলিশকে জানাতে বললে ছাত্রের দাদা সিরাজুল আলম প্রেমতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে গিয়ে অভিযোগ করেন। পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে এলাকার লোকজন বিষয়টি মিমাংসা করার কথা বলে।

কিন্তু পুলিশ সাহারিয়ার অবস্থা দেখে আগে চিকিৎসা করার কথা বলে। পুনরায় ২৪ আগষ্ট সাহারিয়ারকে গোদাগাড়ী উপজেলা (প্রেমতলী) স্থাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। স্থাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন থাকার পর তার অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ২৫ আগষ্ট তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফাড করা হয়। বর্তমানে সে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

ছাত্রের চাচা সাব্বির হোসেন আরো বলেন, রামেক হাসপাতালে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বলেন মাজার ফেটে গেছে। মেরুডন্ডের হাড় সরে গেছে। সেখানেই তার চিকিৎসা চলছে।

এ বিষয়ে তারতিরুল কুরআন হাফেজিয়া মাদ্রাসার হুজুর হাফেজ আল আমিন বলেন, হাত দিয়ে মেরেছি। এটা ১৯ আগষ্টের ঘটনা। একবার বসে মিমাংশা করার কথা হয়েছে। এখন তারা বলছে হাড় ভেঙ্গে গেছে। হাড় ভেঙ্গে গেলে ১৯ তারিখ হতে ২৪ তারিখ পর্যন্ত থাকা কি সম্ভব? ২৪ তারিখ তারা উপজেলা (প্রেমতলী) স্থাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে।

সেখান থেকে আবার রামেকে ভর্তি করেছে। মাদ্রাসার আরো ছাত্র আছে তাদের বললে জানতে পারবেন। হাত দিয়ে ২/১বার মেরেছি। মাদ্রাসাটাকে তুলে দেওয়ার জন্য তারা এ সড়যন্ত্র করছে। মাদ্রাসাটি এখন অনেক এগিয়ে গেছে তাই তারা মাদ্রাসাটি তুলে দেওয়ার জন্য লেগেছে।

প্রেমতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইন্চার্জ শরিফুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। চিকিৎসা করাতে বলেছি। এক্সরে রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।