নাচোলে জোর করে কিস্তি আদায়ের অভিযোগ


নাচোল প্রতিনিধিঃ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের কারণে ব্যাংকের ঋণগ্রহীতাদের জন্য বিশেষ সুবিধার সময় বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোনো ঋণগ্রহীতা ঋণ শোধ না করলেও খেলাপি করা যাবে না। এ সুবিধা আগে জুন পর্যন্ত ছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোনো ঋণগ্রহীতা ঋণ শোধ না করলেও ঋণের শ্রেণিমানে কোনো পরিবর্তন আনা যাবে না। 

সোমবার (১৫ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ ‘ঋণ শ্রেণিকরণ’ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করে সব তফসিলি ব্যাংকে পাঠিয়েছে। ফলে বর্তমানে কোনো ঋণগ্রহীতা যদি ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হন, তাহলে তাকে খেলাপি করা যাবে না।

তবে যদি কোনো খেলাপি ঋণগ্রহীতা এই সময়ের মধ্যে ঋণ শোধ করেন, তাকে নিয়মিত ঋণগ্রহীতা হিসেবে চিহ্নিত করা যাবে।

জোর করে কোন ঋনগ্রহিতার কাছে কিস্তি আদায় করা যাবেনা। এমন সরকারি নির্দেশনা থাকলে ও সরকারি সেই নির্দেশনা কে বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে জোর পূর্বক ভাবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে চলছে কিস্তি আদায়ের হিড়িক।এমনটি অভিযোগ উঠেছে নাচোল পুষ্প পল্লী উন্নয়ন সংস্থার বিরুদ্ধে। শনিবার সকাল ৭টা।ঠিক এমন সময়ে পুষ্প পল্লী উন্নয়ন সংস্থার মল্লিকপুর শাখার ফিল্ড অফিসার এনায়েতুল্লাহর আগমন আমলাইন গ্রামের ঋনগ্রহিতা শরিফা খাতুনের বাড়িতে। পুষ্প পল্লী উন্নয়ন সংস্থার মল্লিকপুর শাখার ফিল্ড অফিসার এনায়েতুল্লাাহ ঋনগ্রহিতা শরিফা খাতুন কে বলেন কিস্তি দেন!শরিফা খাতুন তাঁকে জানান,আমার স্বামী এ্যাকসিডেন্ট করে বাড়িতে বসে আছে। 

করোনায় এমনিতেই খুব কষ্ট করে আমাদের দিন পার হচ্ছে। আজকে ২০০শ টাকা নেন। ফিল্ড অফিসার এনায়েতুল্লাাহ শরিফা খাতুন কে বলেন আপনার কিস্তি একহাজার টাকাই লাগবে।দুইশ টাকা নিবনা।টাকা না দিলে বাড়ি থেকে যাবুনা।শরিফা খাতুন ফিল্ড অফিসার এনায়েতুল্লাহ কে আবারো কাকুতি মিনতি করে বলেন,টাকা থাকলে তো দিয়ে দিতাম,টাকা নাই, রোজগার নাই তাই এবার দুইশ টাকা নেন।

বাকি টাকা পরে দিয়ে দিবো।কাকুতি মিনতির পরও মন গলছে না ফিল্ড অফিসার এনায়েতুল্লাহর। এক পর্যায়ে ঋনের জন্য গালিগালাজ সহ হুমকি প্রদান করতে থাকে ঋন গ্রহিতা শরিফা খাতুন কে। শরিফা খাতুন মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাই।কিন্তু বাড়িতেই ঋনের জন্য অবস্থান নেন ফিল্ড অফিসার এনায়েতুল্লাহ। ঋন গ্রহিতা শরিফা খাতুন অভিযোগ করে বলেন,পুষ্প পল্লী উন্নয়ন সংস্থা থেকে এই বছরে ৬০হাজার টাকা ঋন নিয়েছিলাম। প্রায় ৫০হাজার টাকার কিস্তি পরিশোধের পথে। 

আমি নিয়মিত কিস্তি দিয়ে থাকি।কিন্তু করোনার কারনে স্বামীর ইনকাম না থাকায় খুব অসহায় ভাবে আমার পরিবারের সংশার চলছে। স্বামী এ্যাকসিডেন্ট করে বাসায় রয়েছে। ফিল্ড অফিসার এনায়েতুল্লাহ কে মিনতি করে বারবার বলার সত্তেও তা মানছে না। তিনি টাকা ছাড়া আমার বাড়ি থেকে যাবেনা।সে ঋনের টাকা আদায়ের জন্য মানসিক ভাবে আমাকে চাপ প্রয়োগ করতেছে। গালিগালাজ ও করছে অখথ্য ভাষায়।

এ বিষয়ে পুষ্প পল্লী উন্নয়ন সংস্থার মল্লিকপুর বাজার শাখা অফিসের ম্যানেজার আব্দুর রশিদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মোতাবেক আমরা করোনার মধ্যে কিস্তি আদায় করছি। জোর পূর্বক ভাবে কিস্তি আদায় করা যাবে না সেটির তো সরকারি নির্দেশনা আছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি ফোনটি কেটে দেন।

এ বিষয়ে নাচোল উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা সুলতানার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,এনজিও সংস্থার সাথে মিটিং করে তাদের বলা হয়েছে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঋন গ্রহিতাদের কাছে জোর করে কোন কিস্তি আদায় করা যাবে না। এমটি কেউ করলে তা প্রমানিত হলে সেই সংস্থার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা সহ লাইসেন্স বাতিল করা হবে।