বগুড়ায় আশ্রমের পরিচালক অরুন জ্যোতিকে হত্যার হুমকি দিয়ে শিবিরের চিঠি


বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার বৈতিক সংঘ ও মঠের (আশ্রম) প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অরুন জ্যোতিকে বাংলাদেশ ছাত্র শিবির পরিচয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে আশ্রমের পরিচালক অরুন জ্যোতি এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি ঘটনার পর নিজের নিরাপত্তা চেয়ে নন্দীগ্রাম থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন।

বৈতিক সংঘ ও মঠের (আশ্রম) প্রতিষ্ঠাতা অরুন জ্যোতি জানান, গত ১৭ এপ্রিল বিকালে পোস্ট অফিসের পিয়ন ফোন করে হাটকড়ই বাজারে আসতে বলেন। সেখানে গেলে হাতে চিঠির খামটি দেন। পরে চিঠি নিয়ে আশ্রমে এসে খুলেন তিনি।

সেই চিঠিতে লেখা রয়েছে- শ্রী অরুন জ্যোতি ঠাকুর। কেমন আছেন। আপনি ভালোই আছেন। আমরা ভালো নাই। কারণ আপনি হিন্দু, আমরা মুসলিম। কিন্তু আমাদের একটি অন্য রকম পরিচয় আছে। যে পরিচয় শুনে সবাই ভয় পায়। বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্র শিবির।

এখন মূল কথায় আসি, যদি এদেশে থাকার ইচ্ছে থাকে, যদি দুনিয়াতে বেঁচে থাকার ইচ্ছে থাকে তবে আমাদের সাথী ভাইয়ের উপর থেকে মামলা তুলে নিন। এখন হাটকড়ই এর মাটি ছাত্র শিবিরের ঘাঁটি। তাই তোরা আমাদের অনেক যন্ত্রণা দিয়েছিস। মনে রাখিস, মসজিদ আর মন্দীর এক জায়গায় থাকেনা।

তুই হিন্দুদের সরদার হয়েছিস, তোর আশ্রমে তুই কী করিস আমরা সব জানি। তাই আগামী ১০ দিনের মধ্যে আমাদের সাথী ভাই যদি ফিরে না আসে তাহলে তোর তৈরীকরা ভন্ড আস্তানা ও পুড়িয়ে ভস্ম করে দিবো। আর এটা নিয়ে যদি আবার বাড়াবাড়ি করিস তাহলে তার ফলও পাবি।

মনে রাখিস সব সময় তোর আস্তানা আমাদের নজরদারিতে আছে। ভালো থাকিস ভন্ড সাধু বাবা। পক্ষে বাংলাদেশ ছাত্র শিবির ২নং ওয়ার্ড, ভাটগ্রাম ইউনিয়ন, নন্দীগ্রাম,বগুড়া।

উল্লেখ্য, গত ৮ এপ্রিল রাতে নন্দীগ্রাম উপজেলার হাটকড়ই শ্মশান কালি মন্দিরের দরজা ভেঙ্গে প্রতিমা ভাংচুরের অভিযোগে রেজাউল করিম (৩৫) নামের এক মাদ্রাসা শিক্ষককে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনি সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি উপজেলার রান্ধুনিবাড়ি এলাকায় একটি কওমি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন।

নন্দীগ্রাম উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর আনোয়ারুল হক বলেন, শিবিরের চিঠি দেওয়ার কোনো প্রশ্নই উঠে না। এইটা সম্পন্ন ভূয়া। হয়তো কেউ শয়তানি করে আমাদের উপর দোষ চাপাচ্ছে।

নন্দীগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজমগীর হোসাইন বলেন, শিবির পরিচয়ে বৈতিক সংঘ ও মঠের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অরুন জ্যোতি জীকে চিঠি দিয়েছে এমনটি জেনেছি। তবে এ ঘটনার তদন্ত চলছে। অপরাধী যেই হোক তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।