২৫ ভাগ মার্কিন শ্রমজীবীর বেকার ভাতার আবেদন


রাপ্র ডেস্ক: করোনা ভাইরাসের কারণে মার্কিন অর্থনীতির ওপর চাপ বাড়ছেই। চাকরি হারিয়ে গত এক সপ্তাহে দেশটির প্রায় ৩০ লাখ নাগরিক বেকার ভাতার আবেদন করেছেন। সব মিলিয়ে গত মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন নাগরিক এমন আবেদন করলেন। যা যুক্তরাষ্ট্রের মোট শ্রমজীবীর প্রায় ২৪ ভাগ।

করোনা ভাইরাসের কারণে মার্চে সবকিছু বন্ধ হয়ে যায়। এতে বেকার ভাতার আবেদন বেড়ে কয়েকগুণ হয়ে পড়ে। মার্চের শেষ সপ্তাহে জমা হয় রেকর্ড ৬৮ লাখ আবেদন। এরপর থেকে আবেদনের সংখ্যা কমছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রায় ৩০ লাখ আবেদন জমা পড়েছে বেকার ভাতার জন্য। এই সংখ্যা মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে অর্ধেকেরও কমে নেমে এলেও সেটিও স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ১০ থেকে ১৫ গুণ বেশি।

মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি চার্লস শয়াবের যুক্তরাজ্যের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রিচার্জ ফ্লিন বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে বেকার ভাতার জন্য আবেদনের সংখ্যা এক অকল্পনীয় স্তরে পৌঁছে গেছে। গত আট সপ্তাহ সময় ধরে যেভাবে এটি ক্রমান্বয়ে বাড়ছে, তাতে করে আমেরিকার চাকরির বাজার মহামন্দার পর এই প্রথম এত বাজে অবস্থায় এসে দাঁড়াল।

এ পরিস্থিতি আশার আলো আরও ম্লান হয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বক্তব্যে। প্রতিষ্ঠানের প্রধান সবাইকে সতর্ক করে বলেছেন, প্রাথমিকভাবে যেভাবে আশা করা হচ্ছিল, দেশটির অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া তার চেয়ে অনেক ধীর গতিতে ঘটবে।

মার্কিন পরিসংখ্যান বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, এপ্রিলে দেশটিতে প্রায় দুই কোটি মানুষ কাজ হারিয়েছেন। এতে করে দেশটিতে বেকারত্বের হার পৌঁছায় ১৪ দশমিক ৭ শতাংশে। এতে করে গত এক দশকের কর্মসংস্থান তৈরির অর্জন বলতে গেলে দুই মাসেই হারিয়ে গেছে।

শুধু তাই নয়, করোনার অভিঘাত নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে অর্থনীতির প্রতিটি খাতে। আর স্বাভাবিকভাবেই বিশেষ করে বিভিন্ন ধরনের সংখ্যালঘু ও নিম্ন আয়ের মানুষরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বেশি।

এ পরিস্থিতিতেও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, যেহেতু অনেক রাজ্যেই লকডাউন শিথিল করে সবকিছু খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে, তাই অনেকেই তাদের কাজ ফিরে পেতে শুরু করবেন।

ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের প্রধান মার্কিন অর্থনীতিবিদ পল আসওয়ার্থ বলেন, গত ১০ দিন ধরে বেশিরভাগ রাজ্য লকডাউন শিথিল করতে শুরু করেছে। আমরা আশা করতে পারি, আগামী দুয়েক সপ্তাহে অনেককেই নিয়োগ দেওয়া হবে কাজে। তবে অনেক ছাঁটাইয়ের ঘটনাও ঘটবে। তা সত্ত্বেও বেকারত্বের হার কমে আসবে বলেই আশা করা যায়।