উন্নয়নের ছোয়ায় বদলে গেছে মুন্ডুমালা পৌরসভার চিত্র 


তানোর প্রতিনিধি: দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর ধরে চোখে পড়ার মত তেমন উন্নয়ন মুলক কার্যক্রম ছিল না। অনেক আসা নিয়ে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন সাইদুর রহমান। নির্বাচনের আগে ভোটারদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যদি নির্বাচিত হতে পারি বা আপনারা নির্বাচিত করেন তাহলে অতীতে যা হয়নি বা দেখেন নি সে উন্নয়ন করা হবে।
প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী একের পর এক উন্নয়নের চমক দেখাচ্ছেন মেয়র। শুধু তাই না রাজস্ব বাড়িয়ে দিয়েছেন দ্বিগুন। একারনে দ্বিতীয় শ্রেণী পৌরসভাকে  প্রথম শ্রেণী করার জন্য আবেদন করা হয়েছে। হয়তো দুএক বছরের মধ্যে প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা হতে পারে বলে ধারনা করছেন মেয়রসহ কর্তৃপক্ষ । ফলে মেয়রের উন্নয়ন মুলক কর্মকান্ডে স্বস্তি বিরাজ করছে আপামর পৌর নাগরিকদের মাঝে।
জানা গেছে, বিগত ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর মুন্ডুমালা পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দায়িত্ব গ্রহন করেন ২০২১ সালের মার্চ মাসে । দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই একের পর এক উন্নয়ন করেই চলেছেন। পৌরসভা সংলগ্ন পূর্বদিকে বাগমারা গ্রামের আনাচে কানাচে ১ কোটি টাকা ব্যয়ে আরসিসি রাস্তা নির্মান করেন।
এর আগে পৌরসভার সীমানা প্রচীর ও গেট নির্মান করেন। বাগমারা গ্রামের রাস্তা নির্মানে প্রচুর বাধা ও মামলা পর্যন্ত হয়। কিন্তু কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে গ্রামবাসীর একান্ত সহযোগীতায় রাস্তার কাজ সম্পন্ন করেছেন মেয়র। শুধু মুল রাস্তা না পাড়ার ভিতরে গ্রামবাসীর সুবিধার জন্য আরসিসি রাস্তা করে দিয়েছেন। রাস্তা উদ্বোধনের দিন গ্রামবাসী আনন্দে চাদা তুলে পৌর কর্তৃপক্ষ সহ পাড়ার জনসাধারন কে ভূড়িভোজ করান।
এছাড়াও সাতপুকুরিয়া ২৮০ মিটার, চরক ডাইংপাড়া ৪৫০ মিটার ও চুনিয়াপাড়া ১৮০ মিটার আরসিসিসি রাস্তার কাজ শেষ হয়েছে এবং টকটকিয়া গ্রামে ৬৫০ মিটার আরসিসিসি রাস্তার কাজ চলমান রয়েছে। পৌর নাগরিকরা জানান, বিগত ২০০২ সালের দিকে মুন্ডুমালা পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠিত মেয়র ছিলেন প্রয়াত হেবিওয়েট বিএনপি নেতা শীষ মোহাম্মাদ। তার সময়ে রাস্তা ঘাট সহ নানা উন্নয়ন মুলুক কাজ হয়।
বিগত ২০১১ ও ২০১৬ সালে মেয়র নির্বাচিত হন সাবেক আ”লীগ সভাপতি গোলাম রাব্বানী। তার সময়ে চোখে পড়ার মত খুব একটা উন্নয়ন হয়নি বললেই চলে। কিন্তু সাইদুর স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে মেয়র নির্বাচিত হন। তার প্রথম জীবন শুরু মুন্ডুমালা বাজারের কুলির সরদার হিসেবে, এরপরে মুন্ডুমালা মহিলা কলেজে নৈশ প্রহরীর চাকুরী করেন। তিনি মেয়র হবেন এটা কেউ কল্পনা করেনি।
কিন্তু সে মেয়র হওয়ার আগ থেকেই পৌরবাসীর আপদ বিপদে ছুটে যেতেন এবং মহামারি করোনা ভাইরাসের সময় নিজ তহবিল থেকে প্রচুর অনুদান দিয়ে আপামর পৌরবাসীর মনে জায়গা করে নেয়। মেয়রের দায়িত্ব নিয়েই পৌর ভবনের সীমানা প্রচীর ও গেট নির্মান এবং ভবনকে অন্যরকম ভাবে সংস্কার করে তাক লাগিয়ে দেন। এর পর তিনি মুন্ডুমালা বাজারের তিন মাথা মোড়ে গোল চত্বর ও বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল তৈরি করে নতুন ইতিহাস গড়ে তোলেন। এটা তৈরির সময় নানা ধরনের বাধা বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করা হলেও কোন দিকে কর্নপাত না করে সাহসিকতার সাথে নির্মান কাজ শেষ করেছেন। যার সুফল পাচ্ছেন আপামর পৌরবাসী।
টকটকিয়াগ্রামের সালাম,রবিউলসহ অনেকে জানান, বিগত ১৫ বছর ধরে একাধিকবার আবেদন করেও কোন কাজ হয়নি। ১৫ বছরে যা পায়নি মেয়র সাইদুর সেটা করে দিচ্ছেন। বর্ষা মৌসুমে বাড়ি থেকে বের হওয়া যেতনা। কিন্তু আরসিসি রাস্তা পাওয়াতে গ্রামবাসী আনন্দে আত্মহারা। আমরাও ভাবতে পারিনি এত টাকা ব্যয়ে মেয়র আরসিসি রাস্তা করে দিবেন। মাত্র দুই বছরের মধ্যে যে উন্নয়ন করেছেন, যা ১৫ বছরেও হয়নি।
বিশেষ করে মুন্ডুমালা বাজারের তিনমাথা মোড়ে দিনভর জট লেগেই থাকত। কিন্তু মেয়র গোল চত্বর রাস্তা ও জাতির জনকের ম্যুরাল তৈরি করে চমক সৃষ্টি করেছেন। তিনি যে ভাবে উন্নয়ন শুরু করেছেন সেটা অব্যাহত থাকলে পৌরসভার গ্রামীন রাস্তার চেহার যেমন বদলে যাবে, ঠিক তেমনি ভাবে মানুষের জীবন মানে আমূল পরিবর্তন ঘটবে।
মেয়র সাইদুর রহমান বলেন, বাগমারা,টকটকিয়া, সাতপুকুরি, চরক ডাইংপাড়া ও চুনিয়াপাড়া আরসিসি রাস্তার ব্যয় প্রায় ৫ কোটি টাকা। আর মুন্ডুমালা বাজারে গোলচত্বর, রাস্তা ও ম্যুরাল নির্মানে প্রায় ৫৪ লাখ টাকা হবে। আ”লীগ সরকার ক্ষমতায় আছে বলেই উন্নয়ন করা সম্ভব হয়েছে এবং আগামীতে গ্রামের প্রতিটি রাস্তা আরসিসি করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে। এজন্য প্রায় ১০ কোটি টাকার প্রকল্প দেওয়া হয়েছে, হয়তো অল্পদিনের মধ্যে বরাদ্দ পেতে পারি বলে তিনি আশাবাদী।