করােনা কালেও নদী ভাঙন কবলিত হতদরিদ্র লোকদের নিয়ে পামকিন প্লাসের মহতি উদ্যোগ


আশরাফুল আলম, রংপুর থেকে ফিরেঃ বৈশ্বিক এই মহামারি মোকাবেলায় মানুষ যখন দিশেহারা, ঠিক সে সময়ে বৃহত্তর রংপুর জেলার নদী ভাঙন কবলিত নিঃস্ব চাষিদের উৎপাদিত মিষ্টিকুমড়া খাদ্য সহায়তায় এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বিস্তির্ণ বালুচরে উৎপাদিত এই মিষ্টি কুমড়া হয়েছে বর্তমান ত্রান কার্যের প্রাণ।
পামকিন প্লাসের সহায়তা পুষ্ট চরা লের ১১৭৪ জন চাষি এ বছর রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার তিস্তা, ধরলা ও ব্রক্ষ্মপুত্র নদীর ৭৮৭ হেক্টর ধু ধু বালুচরে প্রায় ২৬০০০ মে. টন মিষ্টি কুমড়া উৎপাদন করেন। নারী-পুরুষের যৌথ উদ্যোগে উৎপাদিত এই মিষ্টি কুমড়া নিজ এলাকায় চাহিদা পূরণের পাশাপাশি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে যার মধ্যে রোহিঙ্গা ক্যাম্পও অর্ন্তভূক্ত।
অতি সম্প্রতি রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন ত্রাণ সামগ্রী হিসেবে পুষ্টিগুনে ভরপুর এই মিষ্টি কুমড়াকে বিশেষ প্রাধান্য দিয়েছে। তারা ১২ হাজার মানুষের মাঝে অন্যান্য উপকরণের সাথে প্রায় ৪০ মে.টন মিষ্টি কুমড়া বিতরণ করেছে। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সম্মানিত মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান (লিটন) এই ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনায় প্রধান ভূমিকা পালন করেন। এক্ষেত্রে সহযোগিতা করেন উষা সিল্ক ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক জনাব মুঞ্জুুর ফারুক চৌধুরী এবং সিটি কর্পোরেশন ম্যাজিস্ট্রেট মি. সমর পাল।
চরাঞ্চলে উৎপাদিত এই মিষ্টি কুমড়াসহ অন্যান্য উচ্চমান সম্পন্ন সবজি ও ফসল যেমন স্কোয়াশ, হ্যালোইন পাম্পকিন, লাউ, মরিচ, চেরি টমেটো, লেটুস, রেড বীট, বেবী র্কন, চীনা বাদাম দেশে খাদ্য নিরাপত্তায় ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত এই চাষিদের কাছে এখনও পর্যাপ্ত পরিমাণ মিষ্টি কুমড়া রয়েছে, যা দেশের এই ক্রান্তিকালে সুষ্ঠু বিপননের মাধ্যমে গরীব চাষির আর্থিক বিনিয়োগের যথাযথ প্রাপ্তির পাশাপাশি ও ত্রাণ গ্রহীতাদের পুষ্টি সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সম্পূর্ন কীটনাশক মুক্ত এবং জৈবসার ব্যবহারে উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়া ও অন্যান্য সবজি বিদেশে রপ্তানী করারও যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রম পরিচালনা করেন ডিরেক্টর ফিল্ড অপারেশনস কৃষিবিদ মিজানুর রহমান
এই প্রযুক্তির উদ্ভাবক, বেসরকারি সংস্থা পামকিন প্লাস এর পরিচালক এ জেড এম নজমুল ইসলাম চৌধূরী জানান, উত্তরাঞ্চলে নদীভাঙন কবলিত হতদরিদ্র চাষিদের অভাবনীয় সাফল্য দেশের অন্যান্য নদীভাঙন কবলিত জেলায় সাময়িক ভাবে জেগে উঠা নদীবক্ষে সম্প্রাসারণের মাধ্যমে ভূমিহীন নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান ও আয় নিশ্চিত করা সম্ভব। বর্তমানে চাষিরা এই মিষ্টি কুমড়া সংরক্ষন ও বাজারজাতকরণে বিভিন্ন সমস্যা মোকাবেলা করছেন। এসব বিষয়ে সহযোগিতা পেলে বালুচরে মিষ্টি কুমড়া উৎপাদন ও রপ্তানীর মাধ্যমে খুলে যেতে পারে সম্ভাবনার এক নতুন দুয়ার।