গরু ও খাসির মাংসের সুস্বাদু ৪ রেসিপি


রাপ্র ডেস্ক: এক মাসের অধিক সময় ঘর বন্দি। হোম কোয়ারেন্টাইনে যেমন অলস সময় পার হচ্ছে না, তেমনি নামি-দামি রেষ্টুরেন্টর খাবার থেকেই বঞ্চিত হচ্ছেন। আবার সামনে ঈদ। তাই ঈদে বিভিন্ন রেষ্টুরেন্টের খাবারের কথা হয়তো মনে পড়বে।

এখন ঘরে থাকাই নিরাপদ, কারণ- স্বাস্থ্যবিদেরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বলছেন। তাই এবারের ঈদের রেষ্টুরেন্ট আড্ডা হোক ঘরেই। সেই আড্ডায় যোগ করতে পারে আমাদের ৪টি রেসিপি।

খাসির মাংসের রেজালা
উপকরণ: খাসির মাংস ২ কেজি, আদা বাটা ২ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ২ চা চামচ, পেঁয়াজ বাটা ১ কাপ, হলুদগুঁড়া ২ চা চামচ, মরিচের গুঁড়া ২ চা চামচ, জিরার গুঁড়া ২ চা চামচ, ধনেগুঁড়া ২ চা চামচ, পোস্তদানা বাটা ২ টেবিল চামচ, তেল ১ কাপ, ঘি ২ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদ অনুযায়ী, কাঁচা মরিচ ১০টি, তেজ পাতা ২টি, দারচিনি ৩ টুকরা, এলাচ ৪টি, পেঁয়াজ কুচি ২ কাপ, আলু ৬টি, কেওড়া জল ১ টেবিল চামচ।

প্রণালী: খাসির মাংস টুকরো করে কেটে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। হাঁড়িতে তেল গরম করে দারচিনি, এলাচ ও তেজপাতার ফোড়ন দিয়ে পেঁয়াজ বাদামি করে ভাজুন। এবারে মাংস ও লবণ দিয়ে ১০-১৫ মিনিট ভেজে নিন।

মাংস ভাজা হলে পোস্তদানা বাটা ও জিরার গুঁড়া বাদে অন্যান্য বাটা মসলা দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে ঢেকে দিন। ১০-১৫ মিনিট পর ঢাকনা খুলে ১ কাপ গরম পানি দিয়ে মাঝারি আঁচে কিছুক্ষণ রান্না করুন ও ঢেকে দিন। আলুগুলো ছিলে লম্বালম্বি মাঝখান থেকে কেটে ২ টুকরা করে দিন। পানি শুকিয়ে এলে আরও ১ থেকে দেড় কাপ গরম পানি দিয়ে আলু এবং কাঁচা মরিচ দিয়ে নেড়ে ঢেকে দিন। ১০ মিনিট পর ঢাকনা খুলে জিরাগুঁড়া ও পোস্তদানা বাটা দিয়ে নেড়ে আবারও ঢেকে দিন।

আলু সেদ্ধ হয়ে গেলে আঁচ কমিয়ে ঢাকনা খুলে প্রয়োজন হলে আরও সামান্য পানি ও কেওড়া দিয়ে হালকা নেড়ে ঢেকে দিন। মাংস মজে তেল অল্প ছাড়লে ১ টেবিল চামচ ঘি দিয়ে নেড়ে ঢেকে দিন। ১০ মিনিট পর চুলা বন্ধ করে দমে রাখুন কিছুক্ষণ।

খাসির ঝাল মাংস
উপকরণ : খাসির মাংস ১ কেজি, ছোট আলু ১৫টি, টক দই আধা কাপ, আদা বাটা ১ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ, মরিচের গুঁড়া ২ টেবিল চামচ, এলাচি ৩টি, দারুচিনি ৪-৫টি, তেজপাতা ৩টি, ধনের গুঁড়া ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া ১ চা-চামচ, পেঁয়াজের কুচি আধা কাপ, তেল আধা কাপ, লবণ

পরিমাণমতো, জিরার গুঁড়া ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ৪-৫টি।

প্রণালি : খাসির মাংসগুলো কেটে ধুয়ে টক দই দিয়ে ২০ মিনিট রেখে দিতে হবে। এরপর আদা বাটা, রসুন বাটা ও লবণ মাখিয়ে আরও ১৫ মিনিট রেখে দিতে হবে। পাত্রে তেল গরম করে তাতে পেঁয়াজের কুচি ভেজে বাদামি করতে হবে। এবার এর মধ্যে আবার আদা বাটা, রসুন বাটা, মরিচের গুঁড়া, ধনে গুঁড়া, হলুদের গুঁড়া, এলাচি, দারুচিনি, তেজপাতা ও লবণ একসঙ্গে মিশিয়ে সামান্য পানি দিয়ে ভালোভাবে মসলাগুলো কষিয়ে নিতে হবে। ছোট আলুগুলো আগেই সেদ্ধ করে নিতে হবে। এবার কষানো মসলায় ছোট আলু ও মাংসগুলো ঢেলে দিন। সামান্য পানি দিয়ে সেদ্ধ করতে দিন। পানি কমে এলে তাতে জিরার গুঁড়া ও কাঁচা মরিচ দিয়ে আবার ঢেকে দিন। ভুনা ভুনা হলে নামিয়ে ফেলুন

আচারে গরুর মাংস
উপকরণ: গরুর মাংস ৩ কেজি, টক দই ১ কাপ, আদাবাটা ৩ টেবিল চামচ, সিরকা আধা কাপ, রসুনবাটা ৩ টেবিল চামচ, মেথি আধা চা চামচ পেঁয়াজবাটা ২ কাপ, ঘি ও তেল ১ কাপ, জলপাইয়ের আচার ৪ টেবিল চামচ, মরিচের গুঁড়া ২ চা চামচ, বাদামবাটা ১ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদ মতো।

প্রণালী: মাংস ধুয়ে পানি ঝরিয়ে আদা, রসুন, পেঁয়াজবাটা, টক দই, সিরকা, মরিচের গুঁড়া, লবণ ও বাদামবাটা দিয়ে আধ ঘণ্টা মেরিনেট করে রাখুন। এবার পাত্রে তেল ও ঘি দিয়ে মেথির ফোড়ন দিন। এরপর মেরিনেট করা মাংস দিয়ে রান্না করুন। মৃদু আঁচে ঢাকনা দিয়ে রান্না করে মাংস যখন সেদ্ধ হবে, তখন জলপাইয়ের আচার দিয়ে আরও ১০ মিনিট পরে নামিয়ে নিন।

গরুর মাংসের কালা ভুনা
গরুর মাংসের কালা ভুনা রান্নার কথা না বললেই নয়, এটা যদিও চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী খাবার কিন্তু দারা দেশের মানুষই সমান ভাবে এই খাবারটি পছন্দ করে। ঢাকার বিভিন্ন হোটেলে এই কালা ভুনা পাওয়া যায়। বিভিন্ন অনুষ্ঠান এমনকি ঘরোয়া আয়জনেও গরুর কালাভুনা রান্না করা হয়। কোরবানির সময় কালা ভুনা ছারা খাবার টেবিল কল্পনাই করা যায় না।

উপকরণ: ২ কেজি হাড় ছাড়া গরুর মাংস, ১/২ চামচ বা মরিচ গুড়া, ১ চামচ হলুদ গুড়া, ১/২ চামচ জিরা গুড়া, ১/২ চামচ ধনিয়া গুড়া, ১ চাচম পেঁয়াজ বাটা, ২ চামচ রসুন বাটা, ১/২ চামচ আদা বাটা, সামান্য গরম মশলা (দারুচিনি, এলাচি), ১/২ কাপ পেঁয়াজ কুঁচি, কয়েকটা কাঁচা মরিচ,
পরিমাণ মতো লবণ ও সরিষার তেল।

প্রস্তুত প্রণালী: গরুর মাংস ধুয়ে নিয়ে একটি চালুনি পাত্রে রেখে পানি ঝরিয়ে নিন। তারপর লবন, তেল ও বাকি সব মশলা দিয়ে ভালো করে মাখিয়ে নিতে হবে (পেঁয়াজ কুঁচি এবং কাঁচা মরিচ বাদে)। মাখানো মাংসটি এবার চুলায় হালকা আঁচ রেখে জ্বাল দিতে হবে। এবার দুই কাপ পানি দিয়ে আবারো ঢাকনা দিয়ে দিন। মাংস সেদ্ধ হতে সময় লাগবে। যদি মাংস সেদ্ধ না হয় তবে আবারো গরম পানি এবং জাল বাড়িয়ে নিন। ঝোল শুকিয়ে, মাংস নরম হয়ে গেলে রান্নার পাত্রটি সরিয়ে রাখুন। এবার অন্য একটি কড়াই নিয়ে, তাতে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুঁচি এবং কাঁচা মরিচ ভাঁজতে থাকুন। সোনালী রং হয়ে আসলো সেই কড়াইতে গরুর মাংস দিয়ে , হালকা আঁচে ভাজতে হবে। মাংস কাল হয়ে যাওয়া পর্যন্ত নাড়তে থাকুন, খেয়াল রাখতে হবে যাতে মাংস পুড়ে না যায়। সবশেষে রান্নাটি নামানোর আগে লবণটি চেখে নিন। কালা ভুনার স্বাদ আরো বাড়াতে খাঁটি সরিষার তেল ব্যবহার করুন।