টানা বসা কাজে যে ক্ষতি হচ্ছে আপনার!


আপনি যখন আপনার ডেস্কে কাজে মগ্ন, তখন ঘাড়ের ব্যথা কি মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে? তাহলে জেনে রাখুন, এই ঘণ্টার পর ঘণ্টা ডেস্কে বসে কাজ করার ফলে ঘনিয়ে আসছে বিপদ। বিশেষ করে যারা দিনের অনেকটা সময় বসে কাটাতে বাধ্য হন। তারাই বেশি ডরম্যান্ট বাট সিনড্রোমে আক্রান্ত হতে পারেন। আট ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বসে থাকলে ডিস্কে, ঘাড় ও পিঠে ক্ষতি  হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

হাত-পা যদি প্রয়োজনীয় ব্যায়াম না পায়, তাহলে তা ধীরে ধীরে দুর্বল হতে শুরু করে। ঠিক সেই একই নিয়মে দুর্বলতা বাসা বাঁধতে আরম্ভ করে আপনার শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিতম্বেও। তারই প্রকাশ দেখা যায় হাঁটু আর কোমরের নিচের ব্যথায়। শরীরের কোনও পেশী বা সন্ধিই যেভাবে তার থাকার কথা, সে ভাবে থাকতে পারছে না। তার ফলই ব্যথা। যত এ জিনিস চালিয়ে যাবেন, তত বাড়বে ব্যথা।

টানা বসে কাজ করার ফলে যে ক্ষতিগুলো হয়

১.কার্ডিওভাসকুলার জটিলতা।

২. ডায়াবেটিসের ঝুঁকি।

৩. পেশী অধঃপতনের ঝুঁকি।

৪.পায়ের সমস্যা।

৫. চাপের মাত্রা বৃদ্ধি মেরুদণ্ডের গঠনের ভারসাম্যহীনতা।

ব্যথা রোধে করণীয়

• অফিসে যেমন চেয়ার টেবিলে বসে কাজ করতেন, এখনও সে ভাবে করুন। মাঝেমধ্যে এক-আধ বার বিছানা বা সোফায় বসে কাজ করলেও খেয়াল রাখুন ঘাড় ও কোমর যেন সোজা থাকে।

• চেয়ার টেবিলের উচ্চতা এমন রাখুন যাতে ঘাড় সোজা রেখে কাজ করতে পারেন।

• কাজের মাঝে ফোন এলে কাঁধ আর ঘাড়ের মাঝে ফোন ধরে কাজ চালিয়ে যাবেন না। হয় স্পিকার চালু করুন, না হলে ইয়ার ফোনে কথা বলুন, নয়তো কাজ বন্ধ রাখুন সেই সময়টুকু।

• সাধারণ চেয়ারে বসে কাজ করলে কোমরের কাছে কুশনের সাপোর্ট দিন।

• কম্পিউটারে ঘণ্টা খানেক কাজ করার পর মিনিট দশেক চোখের কাজ বন্ধ রাখুন৷ ফাঁকা পেয়েছেন বলে একটু টিভি দেখে নিলেন বা মোবাইল চেক করলেন, তা কিন্তু হবে না৷ একটু চলাফেরা কি স্ট্রেচিং করলে বা চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকলে চোখ, ঘাড়, কোমর সবই বিশ্রাম পাবে।

• ৮-১০ ঘণ্টা কাজের মাঝে কম করে দু’বার খোলা হাওয়ায় ১০-১৫ মিনিট ঘুরে আসুন। বাইরে যাওয়া তো এখন সম্ভব নয়, তাই ছাদেই একটু পায়চারি করে নিন।

• দিনে অন্তত এক বার কয়েকটি ব্যায়াম করুন।

• দিনে এক বার কী দু’বার ১৫-২০ মিনিট একটু জোরে হাঁটুন।

• কোমরের ব্যথা কম রাখতে করবেন ভুজঙ্গাসন ও শলভাসন।

• কাজের মাঝে উঠে একটু আড়মোড়া ভাঙার মতো করবেন।

খাওয়া-দাওয়া

বাড়ির খাবার যেমন খাচ্ছেন খান, সঙ্গে ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার একটু খেতে হবে। কাজেই ডিম, দুধ, দই খাওয়ার চেষ্টা করুন নিয়মিত। পানি পান করুন পর্যাপ্ত। চা-কফি-কোল্ডড্রিঙ্কে-মদ-সিগারেটে কমান ভালো থাকতে পারবেন।