নাটোরে আ’লীগেরমনোনয়ন চাইলেন শিক্ষক হুমায়ুন কবির


সোহের রানা, নাটোর প্রতিনিধি:  নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের বর্তমান ও সাবেক দুই এমপির বিরুদ্ধে বিষোদগার করে আগামী সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চাইলেন ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি প্রধান শিক্ষক এস এম হুমায়ুন কবির। বললেন এই আসনে যারা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী তারা সবাই দুর্নীতিবাজ ও নিয়োগ বাণিজ্যের সাথে জড়িত। কেউ কেউ আবার নেশাগ্রস্থও বটে।

সোমবার শহরের হাফরাস্তা এলাকার একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হুমায়ন কবির বললেন, বর্তমান এমপি শহিদুল ইসলাম বকুলের পিতা আজিজুল হক মুক্তিযুদ্ধের সময় মুসলিম লীগ করতেন। পরে তিনি বাগাতিপাড়া উপজেলার বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। দেশ স্বাধীন হোক মুসলিম লীগ এটা কখনই চায়নি। অথচ তার ছেলে বকুল এখন এমপি। তিনি দাবী করেন, বকুল এমপি বলেন তিনি নিয়োগ দিয়ে এক কাপ চাও খান না। কিন্তু গোপালপুর কলেজ সরকারী করণের জন্য তিনি ২৯ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। ৭/৮ মাস আগে তিন জন ল্যাব সহকারী নিয়োগ দিয়ে তিনি ৪০ লক্ষ টাকা নিয়েছেন। বাবুল আখতারকে অধ্যক্ষ নিয়োগ দিয়ে ২৫ লক্ষ টাকা নিয়েছেন।

সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদও নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন দাবী করে তিনি বলেন, তার আমলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বাণিজ্য করে শত কোটি টাকা নিয়েছেন। ২০১৪ তিনি গোপালপুর ডিগ্রী কলেজ বাদ দিয়ে গোপালপুর মহিলা কলেজ সরকারি করে দিবে বলে ১ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন।

দলের আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী ইসাহাক আলী সালামপুর স্কুলের সভাপতি থাকার সময় ৫ জনের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা নিয়েছিলেন। তার (ইসাহাকের) রাজশাহীতে ২ কোটি টাকা মূল্যের বাড়ি আছে বলেও তিনি দাবী করেন। মনোনয়ন প্রত্যাশী বকুল, কালাম, ইসাহাক, সাগর সবাই ঘুষ খোর সমাজের মুখোস পড়া টিকটিকি এবং রক্ত চুষা সান্ডা বলে মন্তব্য করেন তিনি। তার (হুমায়ন কবির) পিতা এস.এম বদর উদ্দিন একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, তার তিন ভাইও মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তার পিতা এস.এম বদর উদ্দিন এলাকায় অনেক স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদরাসা ও হাট-বাজার প্রতিষ্ঠা করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাদের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।

তার ভাই হাবিব ভাই জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের বিভিন্ন দায়িত্বে ছিলেন। তিনি (হুমায়ুন কবির) উপজেলার মাড়িয়া হাজাম পাড়া জামে মসজিদে ৪ বছর ধরে সভাপতি থাকাকালীন সময়ে মসজিদের নামে প্রায় ৫ লাখ টাকা জমা হয়েছে। অতচ এর আগে যারা সভাপতি ছিল তারা ২২ বছরে ২২ টাকাও জমা দেখাতে পারেনি। বিএনপির দ্বারাও তাদের পরিবার নির্যাতিত। তার ভাই ১৯৯৬ সালে লোকমানপুর রেল-লাইন এর ওপর জনতার মুক্ত মঞ্চ তৈরি করে এক মাস ট্রেন চলাচল বন্ধ রেখেছিলেন।

তাদের পরিবার আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে সাথে ছিল। সুসময়ে তাদের কোন সুযোগ দেওয়া হয়নি। তাই বর্তমান এমপি বকুল ও সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদকে আর মনোনয়ণ না দিয়ে তাকে (বাগাতিপাড়ার লোকমানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবিরকে) মনোনয়ন দেওয়ার জন্য তিনি দাবী জানান।