ব্রমপুত্র নদের ভাঙ্গন রোধে প্রতিকার চেয়ে এলাকাবাসির বিক্ষোভ ও মানববন্ধন


মাজহারুল ইসলা,রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: পানি কমার সাথে সাথে ব্রম্মপুত্র নদের বাম তীরে ভয়াবহ ভাঙ্গনের রুপ নেওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে নদের কুলঘেষা মানুষ গুলো।

এ নিয়ে ব্রম্মপুত্র নদের তীরঘেষা অসহায় মানুষ গুলো ভাঙ্গন রোধের দাবীতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন। গতকাল মোমবার দুপুর ১ টার দিকে রৌমারী উপজেলার চরশৌলমারী ইউনিয়নের সুখেরবাতি, নয়াপাড়া, ঘুঘুমারীসহ ৮টি গ্রামবাসীর উদ্দ্যোগে এ বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন।

এতে বক্তব্য রাখেন, জাহাঙ্গীর আলম, জামাল বাদশা, দরবেশ আলী, ইউসুফ আলী, রহিমা খাতুন, মুলুক জান বেওয়াসহ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকায় নদীর ভাঙ্গন ভয়াবহ রুপ নিয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে নদী ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা না নিলে মুথেরবাতিসহ কয়েকটি গ্রাম নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাবে।

সুখেরবাতি গ্রামের রহিমা খাতুন বলেন, কয়েকদিনের মাথায় আমার বাড়িটি নদী গর্ভে হারিয়ে যাওয়ায় খোলাকাশের নিচে পোলাপান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

আমি সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছি। বাচ্চাদের নিয়ে খুবই কষ্টে আছি। আমরা রিলিফ চাইনা নদী ভাঙ্গন বন্ধ চাই।
একই গ্রামের মল্লিকা বেওয়া বলেন, আমার ঘরবাড়ি ও গাছপালা সব নদীতে ভেঙ্গে গেছে। নিজের জায়গা না থাকায় নদীর পাশেই ছাপড়া তুলে কোন মতো ঠাই করে আছি।

সুখেরবাতি গ্রামের সাবেক মেম্বার মাইন উদ্দিন বলেন, গত মাসে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী নদী ভাঙ্গন এলাকা দেখে গেছেন। আপাতত ভাঙ্গনরোধে ৫০ হাজার জিও ব্যাগ দেওয়ার কথা থাকলেও দিয়েছে মাত্র ৬ হাজার ব্যাগ। যা দিয়ে এক কোনাও ভাঙ্গন রোধ করা সম্ভব নয়।

বক্তব্যে আহসান হাবিব বলেন, প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকায় নদীর ভাঙ্গন ভয়াবহ রুপ নিয়েছে। এখনই নদী ভাঙ্গন রোধকরা না হলে ঘুঘুমারীসহ কয়েকটি গ্রাম নদীতে বিলিন হয়ে যাবে। অনেক পরিবার তাদের ঘরবাড়ি নদীতে বিলিন হওয়ায় অসহায় হয়ে পড়েছে। বলাবাহুল্য এক শ্রেণীর স্বার্থান্বেষী মহল ও ঠিকাদারের যোগসাজসে নদী ভাঙ্গনকে পুজি করে বারবার বরাদ্দ আনলেও কামের কাম কিছুই হচ্ছে না।

কুড়িগ্রাম জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, বন্দবেড় ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙ্গন রোধে প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। তবে চরশৌলমারী ইউনিয়নের সুখেরবাতি, ঘুঘুমারী খেয়াঘাট, চরগেন্দার আলগা এলাকায় ভাঙ্গনরোধের কোন প্রকল্প নেই। চলমান প্রকল্পে যুক্ত করে আগামীতে বাস্তবায়ন করা হবে। আপাতত জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ হাসান খান বলেন, এর আগেও আমি পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। উপজেলা প্রশাসন থেকে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের জন্য কিছু সহযোগিতা করা হয়েছিল। এবিষয়ে নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।