রায়গঞ্জে কাঠের ঘানি টানা সেই দম্পতি পেলেন নতুন ঘর ও গরু


মোঃ মোকাদ্দেস হোসাইন সোহান, রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জের শ্রীদাসগাঁতী গ্রামের গরুর বদলে শরীর দিয়ে ঘানি টানা সেই অসহায় আবুল কালাম ও তার স্ত্রী আসমা বেগম পেলেন নতুন ঘর ও গরু। গত বেশ কিছু দিন আগে জাতীয়  ও স্হানীয় বিভিন্ন পত্রিকা এবং বিভিন্ন অনলাইনে সংবাদ প্রকাশের পর তাদের নতুন ঘর তৈরি ও গরু উপহার দিয়েছেন শাহজাদপুর উপজেলার হাউজ অব মান্নান চারিটেবল ট্রাস্ট।

এমন মানবিক সহায়তা পেয়ে অবশেষে এই দম্পতির দুই যুগের নিদারুন কস্টের অবসান হলো। গত (২২ মে ২০২৩) সোমবার দুপুরে আনুস্ঠানিক ভাবে তাদের নতুন ঘর ও গরু তুলে দেয়া হয়। হাউজ অব মান্নান চারিটেবল ট্রাস্টের শাহবাজ খান সানিসহ তার দলবল নিয়ে ঘানি টানা দম্পতির হাতে একটি ষাঁঢ় গরু ও ঘরের চাবি তুলে দেন। এ সময় রায়গঞ্জ উপজেলার স্হানীয় সাংবাদিকরা উপস্হিত ছিলেন। উল্যেখ্য, গত দুই যুগের বেশি সময় ধরে গরুর বদলে বুক দিয়ে ঘানি টেনে আসছিল মোঃ আবুল কালাম ও তার স্ত্রী আসমা বেগম।

তারা প্রতিদিন কাক ডাকা ভোর থেকে কাঠের ঘানির ওপর কয়েকটি ভারী পাথর চাপিয়ে ঘুরতে থাকেন। এরপর ঘানি থেকে ফোঁটায় ফোঁটায় তেল বের হয়। এভাবে তারা প্রতিদিন ফজর থেকে শুরু করে দুপুর পর্যন্ত ৮ কেজি সরিষা ঘানিতে ভেঙ্গে আড়ায় কেজি তেল বের করেন। সেই তেল ৪শত টাকা কেজি দরে বাজারে বিক্রি করেন।

এ থেকে প্রতিদিন ২৫০ টাকা আয় হয়। তা খেয়ে না খেয়ে সংসার চলছে তিদের। কিন্তু বয়সের ভারে তারা অসুস্হ হলেও কেবল বেচে থাকার জন্য প্রতিদিন এই অমানষিক কস্ট করেছিল তারা। সামান্য একটু ভিটে মাটি আর একটি ভাঙ্গা ঘর ছাড়া তাদের কিছুই নেই। জাতীয় ও স্হানীয় বিভিন্ন পত্রিকায় তাদের এই দুঃখ তুলে ধরে সচিত্র প্রতিবেদন এবং বিডিও সংবাদ প্রকাশের পর তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর তাদের প্রতি মানবিক সহায়তায় হাত বাড়ায় জেলার শাহাজাদপুর উপজেলার হাউজ অফ মান্নান চারিটেবল ট্রাস্ট।

নতুন ঘর, পাকা টয়লেট, টিউবওয়েল পেয়ে আবেগ আব্লত হয়ে পড়েন আবুল কালাম আজাদ ও তার স্ত্রী আসমা বেগম। তারা জানায়, আমাদের আর কেনো দুঃখ নাই। এখন আর কস্ট করে বুক দিয়ে ঘানি টানতে হবে না। ঘর পাইছি, গরু পাইছি। এসময় তারা হাউজ অব মান্নান চ্যারিটেবল ট্রাস্টের কাছে কৃতগ্যতা প্রকাশ করেন।