সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন ক্লাস বাধ্যতামূলক হচ্ছে


রাপ্র ডেস্ক: নভেল করোনাভাইরাসের কারণে দেশের সব ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিতে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সে অনুযায়ী, উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাস নিতে বলা হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অনলাইন বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহসহ বেশ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষক নেতা ও সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।

সভা সূত্র জানায়, করোনার কারণে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজসমূহে অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাস নিতে বলা হয়েছে। যাদের এ সুবিধা নেই তাদেরকে দ্রুত ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। আর যাদের অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সুবিধা আছে, তাদের অবিলম্বে সে প্রক্রিয়া শুরু করতে বলা হয়েছে।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে কতদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হবে তা বলা যাচ্ছে না। এ জন্য দেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে অনলাইনের আওতায় ক্লাস কার্যক্রম শুরুর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে যাদের সক্ষমতা নেই, তাদেরকেও সেই পরিবেশ তৈরি করতে বলা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও অনলাইন কার্যক্রম চালু রাখতে হবে। ছুটি দীর্ঘায়িত হলে নতুন করে সেশনজটে না পড়তে পরীক্ষা ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের প্রস্তুতি নেয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন দীপু মনি।

এছাড়া সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা কার্যক্রমে শর্ত শিথিল করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এ ক্ষেত্রে অনলাইনে ক্লাস, সেমিস্টার ফাইনাল ও অন্যান্য পরীক্ষা এবং ভর্তি কার্যক্রম চালাতে পারবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। তবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি আদায়ের ক্ষেত্রে কোনো ধরণের চাপ দিতে পারবে না। সেই সঙ্গে কোনো শিক্ষক-কর্মকর্তার বেতন-ভাতা কিংবা চাকরি সংক্রান্ত সমস্যাও সৃষ্টি করা যাবে না।

বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কমিটি তাদের পরীক্ষা সংক্রান্ত সকল বিষয় ঠিক করবে। অন্যদিকে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা কীভাবে নেবে, সে বিষয়ে করণীয় ঠিক করে দেবে কমিশন। পাশাপাশি আগামী সেমিস্টারের ভর্তি কত তারিখ থেকে কত তারিখ পর্যন্ত চলবে; সে বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন দেবে।

বৈঠকে ছাত্র-ছাত্রীদের মিডটার্ম ও ফাইনাল পরীক্ষার বিষয়ে বলা হয়, প্রাথমিকভাবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য কয়েকটি অপশন দেবে ইউজিসি। এ ক্ষেত্রে আগামী সেমিস্টারের শুরুতে বর্তমান সেমিস্টারের পরীক্ষা নিতে পারে। এছাড়াও আন্তর্জাতিকভাবে যেসব পদ্ধতিতে অনলাইন পরীক্ষা, সেই প্রক্রিয়াও অনুসরণ করা যাবে। তবে পরীক্ষার কারণ দেখিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে টিউশন ফি আদায়ের জন্য চাপ দেয়া যাবে না।

বৈঠকে আরো বলা হয়, স্কুল-কলেজের পাশাপাশি দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম কোন উপায়ে চালু হবে, সে বিষয়ে দ্রুতই করণীয় ঠিক করা হবে বলে জানানো হয়।

জানতে চাইলে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে আমরা পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদালয়ের পাঠদানসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্ষেত্রে যে আলোচনা হয়েছে যে, তা হলো- ইউজিসি প্রদত্ত এর আগের নির্দেশনা অনুযায়ী বর্তমান (স্প্রিং-২০২০) সেমিস্টার চলবে। আমরা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে একটি গাইডলাইন প্রকাশ করবে, যেখানেবর্তমান সেমিস্টারের পরীক্ষা ও আগামী সেমিস্টারের সার্বিক নির্দেশনা থাকবে।