সেই শিকলবন্দী মেয়ে উদ্ধার, জেলে গেলেন বাবা


আরিফুল ইসলাম, নাটোর প্রতিনিধি: অবশেষে শিকলবন্দী সাদিয়া ইসলাম শিমুকে রবিবার (২৮ জুন) উদ্ধার করেছেন নাটোরের গুরুদাসপুর থানার পুলিশ। শিকলবন্দী মেয়েকে নিয়ে গণমাধ্যমে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদটি নজরে আসে গুরুদাসপুর থানার ওসি মো. মোজাহারুল ইসলামের। 

 ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই মেয়েকে শিকলবন্দী থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। সাদিয়া ইসলাম শিমু। দশম শ্রেণির ছাত্রী। পরিবারের অজান্তে একটি ছেলের সঙ্গে পালিয়ে বিয়ে করার অপরাধে প্রায় এক মাস ধরে তাকে শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে শিকলবন্দী করে রাখা হয়েছিল। নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাপিলা ইউপির নওপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। শিমু ওই এলাকার নওপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। 

নওপাড়া গ্রামের মো. সাইফুল ইসলামের বড় মেয়ে। ভুক্তভোগী মেয়ে সাদিয়া ইসলাম শিমু জানান, পাঁচ বছর ধরে প্রতিবেশী বকুল মন্ডলের ছেলে মাসুদ রানার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। তিন মাস আগে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে তারা দুইজন বিয়ে করে। তারপর তার বাবা অপহরণ মামলা করে। পরে পুলিশ গিয়ে ঢাকা থেকে তাদের আটক করে নিয়ে আসে। তার স্বামী ও শ্বশুরকে আটক করে নাটোর জেল হাজতে প্রেরণ করে এবং তাকে তার বাবার কাছে পাঠানো হয়। পরে আদালতের নির্দেশে তাকে তার বাবার হেফাজতে শর্ত সাপেক্ষে হস্তান্তর করা হয়। 

কোনো রকম চাপ সৃষ্টি কিংবা নির্যাতন যেন না করা হয় তার জন্য আদালতের নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু তাকে তার বাবা বাড়িতে নিয়ে এসে শিকলবন্দী করে এবং শারীরিক নির্যাতন চালায়। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে তার বাসা থেকে উদ্ধার করে। 

গুরুদাসপুর থানার ওসি মো. মোজাহারুল ইসলাম বলেন, গণমাধ্যমে সংবাদ দেখার পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। বাড়িতে প্রবেশ করার পর বাড়ির একটি কক্ষে ওই মেয়েকে তার হাত ও পায়ে শিকলবন্দী অবস্থায় পাওয়া যায়। সেখানেই তার হাত ও পায়ের শিকল খুলে দেয়া হয় এবং থানায় নিয়ে আসা হয় ও মেয়ের বাবা সাইফুল ইসলামকে আটক করা হয়। 

রোববার মেয়ের করা মামলায় মেয়ের বাবাকে নাটোর জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ওই মেয়েকেও আদালতে পাঠানো হয়েছে। এখন আদালত সিদ্ধান্ত দেবে ওই মেয়ে কোথায় থাকবে?